পৌরসভার মেয়র থাকাকালে দুর্নীতির অভিযোগে রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গত রবিবার (১২ জানুয়ারি) কমিশন মামলার অনুমোদন দেয়। দুদকের উপপরিচালক জেসমিন আক্তার এক চিঠিতে বিষয়টি দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালককে জানিয়েছেন।
আবুল কালাম আজাদ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিটে প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি বাগমারার তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র ছিলেন। এমপি হওয়ার পর আবুল কালাম আজাদ উপনির্বাচনে তাঁর স্ত্রী খন্দকার সায়লা পারভীনকে মেয়র করেছিলেন। মেয়র থাকাকালে এই পৌরসভারই প্রায় ৩৩ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, পরিবেশ ও জলবায়ু তহবিলের ১৩ কোটি টাকার একটি বিশেষ প্রকল্প পেয়েছিল তাহেরপুর পৌরসভা। এই প্রকল্পে একটি বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ ছিল। দুদক অভিযোগ পায়, টেন্ডারে থাকা পরিধির চেয়ে কম বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বিল পুরো কাজেরই তোলা হয়।
এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশ করে প্রায় ৩৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন তৎকালীন মেয়র আবুল কালাম আজাদ। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালেই দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিন এ ব্যাপারে অনুসন্ধান করেন।
এরপর গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর অনুসন্ধানের প্রতিবেদন দুদকের জেলা কার্যালয় থেকে পাঠানো হয় বিভাগীয় কার্যালয়ে। ২৭ অক্টোবর এই প্রতিবেদন বিভাগীয় কার্যালয় থেকে প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়। এরপর মামলা অনুমোদন করেছে কমিশন। এ ব্যাপারে দ্রুতই মামলা হবে।
মামলায় সাবেক মেয়র ও সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ ছাড়াও আরও যারা আসামি হবেন, তারা হলেন- রাজশাহীর নিউমার্কেট এলাকার ঠিকাদার খালেদ মোহাম্মদ সেলিম, তাহেরপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল কাদের এবং উপসহকারী প্রকৌশলী জাহিদুর হক।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিন বলেন, “মামলার অনুমোদনের বিষয়টি জেনেছি। প্রস্তুতি নিচ্ছি, দুয়েকদিনের মধ্যে মামলা দায়ের করা হবে।”
আওয়ামী সরকারের পতনের পর আবুল কালাম আজাদ গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাগারে আছেন। তিনি মেয়র থাকাকালে জলবায়ু তহবিলের ওই প্রকল্পের ঠিকাদারদের কাছ থেকে আদায় করা ভ্যাট ও ট্যাক্সের ৫৫ লাখ ৬ হাজার ৭৮২ টাকা আদায় করে তা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাতেরও অভিযোগ আছে। কৃষি ও পরিবেশ অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষায় ওই আর্থিক অনিয়ম ধরা পড়ে।