মাদারীপুরের রাজৈর থানা পুলিশের দুই উপ-সহকারী পুলিশ পরিদর্শকের (এএসআই) নারী নিয়ে অশ্লীল নৃত্যের কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড করা হয়েছে।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো. সাইফুজ্জামান।
অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা হলেন- রাজৈর থানার উপ-সহকারী পুলিশ পরিদর্শক মো. হাদিবুর রহমান ও স্বপন অধিকারী।
সম্প্রতি রাজৈর থানার দুই উপ-সহকারী পুলিশ পরিদর্শকের চারটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, দুই পুলিশ সদস্য একটি টিনশেট ঘরে একাধিক নারীকে নিয়ে অশ্লীলভাবে নাচছেন। ওই কক্ষের খাটে বসে নৃত্য উপভোগ করতে দেখা যায় রাজৈর উপজেলা যুবলীগ নেতা রাহাত হোসেনকে।
অভিযোগের বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন কথা বলেছেন অভিযুক্ত দুই উপ-সহকারী পুলিশ পরিদর্শক। অভিযুক্ত উপ-সহকারী পুলিশ পরিদর্শক স্বপন অধিকারী বলেন, “আমি বিনদাস মানুষ, মাঝে মধ্যে একটু আমোদ ফূর্তি করি। অনেক সময় আসামি ধরতে নানা কৌশল নিতে হয়। এতে যদি অন্যায় হয়, তাহলে আমি দোষী। আর অন্যায় না হলে কিছু করার নেই।”
অপর উপ-সহকারী পুলিশ পরিদর্শক মো. হাদিবুর রহমান বলেন, “আমার জন্মদিন উপলক্ষ্যে কিছুদিন আগে বন্ধু-বান্ধব মিলে একটু আনন্দ-ফূর্তি করেছি। সেটা ভিডিও করে কে ভাইরাল করল, বিষয়টি বুঝে আসছে না। আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রও হতে পারে। আমি ভুল শিকার করছি, এরকম কাজ আর কখনো করব না।”
যুবলীগ নেতা রাহাত হোসেনের উপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কে কে ছিল, সেটা জানি না। আমার বন্ধুরা মিলে এমন আয়োজন করেছিল। তাই সেখানে গিয়েছি। তাছাড়া আমাদের শরীরে কোনো ইউনিফর্ম ছিল না। সবারই কম বেশি আনন্দ-ফূর্তি করার অধিকার আছে।”
যুবলীগ নেতা রাহাত হোসেন পলাতক থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ মাসুদ খান বলেন, “পুলিশ বাহিনী শৃঙ্খলা মেনে কাজ করে। কোনো অবস্থায় আইনের বাহিরে কিছু করতে পারে না। যদি অন্যায় বা শৃঙ্খলা ভঙ্গের কাজ বাহিনীর কেউ করেন, তার দায়ভার পুলিশ বিভাগ নেবে না। অভিযুক্তদের বিষয় জানতে পেরে তাৎক্ষণিক পুলিশ সুপারকে অবহিত করা হয়। তিনি তাদের ক্লোজড করেছেন।”
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো. সাইফুজ্জামান বলেন, “পুলিশ বাহিনী অত্যন্ত শৃঙ্খলা মেনে কাজ করে। যে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে, সেটা অত্যন্ত নিন্দনীয়। কোনো ভাবেই এমনটি কোনো পুলিশের সদস্য করতে পারেন না। তাৎক্ষনিক অভিযুক্তদের পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড করা হয়েছে। অচিরেই শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় বিভাগীয় মামলা করা হবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।”