চাঁদপুরে শীতের দাপট বৃদ্ধির সাথে সাথে হু হু করে বেড়েছে শীতজনিত রোগ। যার মধ্যে অধিকাংশই রোটা-ভাইরাসের কারণে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী। কুমিল্লা, চাঁদপুর, লক্ষীপুর, নোয়াখালীসহ আশপাশের জেলার শিশুরা ব্যাপকহারে রোটা-ভাইরাসজনিত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।
৩০ ডিসেম্বর থেকে ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত গত ১৫ দিনে রোগে আক্রান্ত হয়ে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) চাঁদপুরের মতলব হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৪৫৫০ জন রোগী। প্রতিদিন গড়ে ভর্তি হয়েছে ৩০৩ জন। প্রতি ঘণ্টায় রোগী ভর্তি হয়েছেন ১৩ জন করে।
এরমধ্যে শূন্য থেকে ৫ বছর বয়সী ৩৮৭৭ জন। আক্রান্তদের মধ্যে শিশু শতকরা ৮৫.২ জন। ভর্তি রোগীর সংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের তিনগুণের বেশি। তবে কারো মৃত্যু হয়নি। প্রায় ২০/২৫ ভাগ রোগীই কয়েক ঘণ্টা চিকিৎসা সেবা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে যায়। শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় ভাইরাসের বংশবৃদ্ধির অনুকূল পরিবেশ থাকায় ও দূষিত পানি প্রাণ করায় শীতে রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।
মতলব হেলথ রিচার্জ সেন্টারের হেড (আইসিডিডিআরবি) কর্মকর্তা ডা. এম ডি আল ফলজ খান জানান, ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে চাঁদপুর সদর উপজেলার ৩৮৫ জন, ফরিদগঞ্জ উপজেলার ২১১ জন, হাজীগঞ্জ উপজেলার ১৯০ জন, কচুয়া উপজেলার ২৯১ জন, মতলব উত্তর উপজেলার ১৫৮ জন, মতলব দক্ষিণ উপজেলায় ১৪৩ জন, শাহারাস্তি ১১৫ জন, কুমিল্লার বরুড়ার ২৩৯ জন, ব্রাহ্মণপাড়ার ৮৬ জন, বুড়িচংয়ের ১৪২ জন, চান্দিনার ২৫৮ জন, কুমিল্লা সদর (আদর্শ) ১৭০ জন, কুমিল্লা সদর (দক্ষিণ) ১২৪ জন, চৌদ্দগ্রাম ৮৩ জন, তিতাস ১২৬ জন, দাউদকান্দি ২৩০ জন, দেবিদ্বার ৩১৬ জন, হোমনা ৭৯ জন, লাকসাম ১০৬ জন, মেঘনা ০৩ জন, মনোহরগঞ্জ ৩৬ জন, মুরাদনগর ৩২৪ জন, নাঙ্গলকোট ৫৯ জন, লক্ষ্মীপুর সদরের ১২৭ জন, কলমনগর ২৭ জন, রায়পুর ৮২ জন, রামগঞ্জ ১০৬ জন, নোয়াখালী সদর ১৪ জন, বেগমগঞ্জ ৪ জন, চাটখীল ৪৯ জন, হাতিয়া ২ জন, শেনবাগ ২ জন, সোনাইমুড়ী ২৪ জন, সুবর্নচর ১ জন, শরীয়তপুরের সখীপুর উপজেলার ৬৭ জন, ঘোসারহাটের ১ জন এবং বেদরগঞ্জের ৫ জন। বাকিরা মুন্সিগঞ্জ, ফেনী আশেপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছে।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিকালে মতলব আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানকার প্রতিটি ওয়ার্ড ডায়রিয়া রোগীতে ভরপুর। হাসপাতালের বারান্দায়ও অনেক রোগী। রোগীদের অধিকাংশই শিশু। রোগীদের চিকিৎসা ও সেবায় কর্মরত চিকিৎসক ও নার্স আন্তরিক।
এ বিষয়ে ডা. এমডি আল ফজল খান বলেন, “আমাদের হাসপাতালে পর্যাপ্ত খাবার স্যালাইন, ওষুধ ও চিকিৎসা-সরঞ্জাম রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে এবং শিশুদের প্রতি যত্নবান থাকলে এ রোগ এড়ানো সম্ভব। হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা ৭০টি কিন্তু এক সাথে ৪০০ রোগীর চিকিৎসা সেবা দিতে পারি।”