করোনা মহামারিতে সংকটাপন্ন বাংলাদেশের অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ ও আসন্ন ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট ভাবনা নিয়ে একটি ভার্চুয়াল সংলাপ হয়েছে।
এ সংলাপের আয়োজন করেছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীদের সংগঠন রয়্যাল ইকোনমিকস ক্লাব (আরইসি)।
শনিবার (৬ জুন) রাতে নোবিপ্রবি রয়্যাল ইকোনমিকস ক্লাবের ফেসবুক পেঁজে এই ভার্চুয়াল সংলাপটি হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে ক্লাবের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক জয় ভৌমিক। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নোবিপ্রবির অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এস এম ওয়াহিদ মুরাদ।
এতে আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব অধ্যাপক ড. শামসুল আলম, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ শাহাদাত হোসেন সিদ্দিকী।
বাজেট বিষয়ক আলোচনায় নানাবিধ তথ্য উঠে এসেছে। অধ্যাপক শাহাদাত হোসেন তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘অন্যান্য দেশের ন্যায় আমাদের অগ্রাধিকারের জায়গা হতে হবে স্বাস্থ্য খাতে। প্রত্যেকেই একমত যে, যদি জীবনকে বাঁচাতে পারি, তবে জীবিকাকেও রক্ষা করা যাবে।’ এছাড়াও তিনি সামাজিক নিরাপত্তা, খাদ্য নিরাপত্তা বাড়ানোর দিকেও জোর দিয়েছেন।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এবারের বাজেটের মূল চ্যালেঞ্জ ৪টি।
১. বাজেটটা হতে যাচ্ছে কোভিড-১৯ এর সময়ে। সুতরাং কোন খাতে কী অভিঘাত হয়েছে, তার মূল্যায়ন ব্যতিরেকে একটা অন্ধকারের ভেতর।
২. যেহেতু মূল্যায়ন নেই, সেহেতু আগের বাজেটের সাথে যে মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা থাকে, তার বেসমেন্ট এখন খুব জটিল অবস্থায় আছে।
৩. ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার পুরো কনসেপ্ট তছনছ করে দিয়েছে কোভিড-১৯।
৪. বাংলাদেশের উন্নয়ন উপাখ্যান প্রবৃদ্ধি নির্ভর, প্রবৃদ্ধির ধারণা নির্ভর বাজেট হলে আমরা আবারও গতানুগতিকতার দিকে ফিরে যাবে।
‘করোনাভাইরাস আমাদের বিভিন্ন খাতের দুর্বলতাগুলো ধরিয়ে দিয়েছে; এখন আমাদের উচিৎ হবে এবারের বাজেটে সেই মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা’, বলেন তিনি।
অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, ‘বাজেটে সাংবিধানিক কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে, যা আমাদের মানতে হবে। ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা আমাদের ভিন্নভাবে ভাবতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সম্পূর্ণ লকডাউনে দেওয়া যাবে না, কারণ, কাজ হারিয়েছে অনেকেই। ইতোমধ্যে দারিদ্র্যতার হার বেড়েছে। এ দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে খাদ্য ও কাজের আওতায় আনতে হবে। আমাদের এবারের বাজেট মূল্যায়িত হবে- আমাদের জীবন কতটা নিরাপদ করতে পারলাম, প্রণোদনার বাস্তবায়ন কতটুকু হলো এবং বাজার ব্যবস্থা কী পরিমান চালু রাখতে পারলাম এসবের উপর।’
‘বাজেটের মূল কৌশল হবে ওই মার্চে ইকোনেমিকে যে অবস্থায় রেখে এসেছি, সে অবস্থায় ফিরে পাওয়া। খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সরকার ভূমিকা পালন করেছে, এছাড়াও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতেও বরাদ্দ বাড়বে এবারের বাজেটে। এ (মন্দাকালীন) বছরের সরকারি ব্যয় বাড়াতে হবে বলেই বাজেট ঘাটতি বাড়াতে হবে। মন্দা মোকাবিলায় মনিটারি পলিসি জোরদার রাখতে হবে আমাদের’, বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানের প্রশ্নোত্তর পর্বে অতিথিবৃন্দ, শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর প্রদান করেন। নোবিপ্রবি/মাহি