ক্যাম্পাস

জাবির বাজেটে গবেষণায় বরাদ্দ দেড় শতাংশ  

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ২০২১-২২ অর্থবছরে ২৬৬ কোটি ২৪ লাখ টাকার বাজেট পাস করা হয়েছে। বাজেটের আকার গত বছরের তুলনায় কমেছে ১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। শিক্ষা ও গবেষণায় নেই ২ শতাংশও। এদিকে বাজেটে ৬০ দশমিক ০৩ শতাংশর বেশি শিক্ষক, প্রসাশন সংশ্লিষ্ট। 

বরাবরের মতো এ বাজেটে শিক্ষা ও শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট খাতগুলোতে নামে মাত্র বরাদ্দ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গবেষণা খাতে মাত্র ৪ কোটি টাকা ধরা হয়েছে, যা মোট বাজেটের ১ দশমিক ৫০ শতাংশ। পাশাপাশি এ বাজেটে ঘাটতি রয়েছে ৪০ কোটি ৯২ লাখ ৩০০০ টাকা।

এদিকে চিকিৎসা খাতে বাজেট ধরা হয়েছে দুই কোটি ৬৩ লাখ ১০০০ টাকা, যা গত বছর ছিল ৩ কোটি ৭১ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। এবারের বাজেটে এই খাতে কমেছে ১ কোটি ৮ লাখ ৭২ হাজার টাকা। এছাড়াও আনুসাঙ্গিক ব্যয় হিসেবে ধরা হয়েছে ২৪ কোটি ৬৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা। আবাসিক হলগুলোতে ২৩ কোটি ৪২ লাখ ৫৪ হাজার টাকা, ভর্তি খরচ বাবদ ১২ কোটি টাকা। অন্যান্য ভাতা ৯ কোটি ৩১ লাখ ২৫ হাজার টাকা ও ব্যবস্থাপনা ব্যয় ১ কোটি ৩২ লাখ ৩০ হাজার টাকা।

বাজেটে শিক্ষক বেতন ও বিভাগ খরচ খাতেও বরাদ্দ বেড়েছে ২৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এই খাতে গত বছর বরাদ্দ ছিল ৯২ কোটি ৯৮ লাখ ৪২ হাজার টাকা। সেটা বাড়িয়ে ৯৩ কোটি ২৩ লাখ ৭২ হাজার টাকা করা হয়েছে। যা মূল বাজেটের ৩৫ শতাংশ। 

অবসরকালীন সুবিধা বাবদ বরাদ্দ ৩৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা। যা মোট বাজেটের ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ। প্রশাসনিক ব্যয় ধরা হয়েছে ৩১ কোটি ৮৫ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। যা মোট বরাদ্দের ১১ দশমিক ৯৬ শতাংশ। বিবিধ ব্যয় বাবদ বরাদ্দ ১৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। যা মোট বাজেটের ৭.৫৭ শতাংশ।

শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট খাতগুলোর মধ্যে ছাত্রবৃত্তি বরাদ্দ ৪৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা কমিয়ে তিন কোটি ৬১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। ক্রীড়া ও খেলাধুলা, শিক্ষার্থীদের পাঠ বহির্ভূত কার্যক্রমে ২৪ লাখ ৭০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

২৬৬ কোটি ২৪ লাখ টাকার এ বাজেট বাস্তবায়নে আয়ের উৎস হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ২৩৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকার অনুদান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় ধরা হয়েছে ২৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

বাজেট সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি বলেন, গবেষণায় বরাদ্দ বেড়েছে কিছুটা, কিন্তু করোনার ভয়াবহতা উপলব্ধি করার পর তা মোটেও পর্যাপ্ত নয়। আর অতীত অভিজ্ঞতা থেকে গবেষণাখাতে বরাদ্দকৃত বাজেটের যথাযথ বণ্টন ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিয়ে সংশয় তো থাকছেই। 

এদিকে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ কমানোর মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীজনদের অনিরাপদ করে রাখার মতো মারাত্মক ভুল আমরা প্রশাসনের কাছ থেকে আশা করিনি। অবাক করা ব্যাপার হলো, অনলাইন এডুকেশনকে ফলপ্রসু করার এবং সচ্ছল ও অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের মধ্যকার বিদ্যমান বৈষম্য দূরীকরণের ন্যূনতম প্রয়াসও দেখা গেলো না বাজেটে। 

গত বছরের মতো এবছরও করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বার্ষিক সিনেট অধিবেশন হয়নি। রোববার (২৭ জুন) সকালে ভার্চুয়্যালি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের এক বিশেষ সভায় এ বাজেট পাস হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।