সময়ের প্রয়োজনে প্রযুক্তির কল্যাণে দেশে অনলাইন ব্যবসার পরিধি বেড়েছে। এবং দিনে দিনে তা সুবিস্তৃত হচ্ছে। অনলাইনে বেচাকেনা নতুন নয়। তবে চলমান সময়ে এই মাধ্যমে পণ্য ক্রয়ে আগ্রহ বেড়েছে গ্রাহকের। বই, পোশাকসহ নানা দ্রব্য বিক্রি হচ্ছে অহরহ। চলতি মৌসুমে অনেক নবীন উদ্যোক্তা আম কিংবা লিচু বিক্রিতে সাফল্য পাচ্ছেন।
গত ঈদুল আযহায় গরুও বিক্রি হয়েছে অনলাইনে। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় এবারও অনলাইনে গরু বিক্রিতে উৎসাহী করা হচ্ছে সব পর্যায়ের মানুষকে। ব্যস্ত নগর ছাড়িয়ে গ্রামাঞ্চলেও গড়ে উঠছে তরুণ উদ্যোক্তা। করোনার এই মহাদুর্যোগে ঘরে বেকার বসে না থেকে ই-কমার্স আর এফ-কমার্সের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। শাড়ি, গহনা, নকশীকাঁথা, হোমমেড ফুড, শো-পিস, ফুলের টব, গাছের চারা, মিষ্টি, মধু, দই, খেলনাসহ সবই বিক্রি হচ্ছে অনলাইনে। ঘরে ঘরে তৈরি হয়েছে নতুন নতুন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান। বিভিন্ন অনলাইন শপে কাজ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছেন অনেক শিক্ষিত তরুণ।
তৌহিদুজ্জামান, বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া উপজেলায়। করোনার শুরুতে একটি ফেসবুক পেজ ‘ই-বই বিতান’-এর মাধ্যমে অনলাইন বুকশপ চালু করে ব্যাপক সাড়া পান। এক বছরের বেশি সময়ে দেশের নানা প্রান্তে পৌঁছে দিচ্ছেন বই। সমকালীন বই ছাড়াও নিয়মিত ই-বই বিতান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতির বই, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থীদের যারা প্রকৌশলে ভর্তিচ্ছু তাদের জন্য ভর্তি গাইড এবং চাকরি প্রত্যাশীদের জন্য বিভিন্ন প্রস্তুতিমূলক বই সরবরাহ করছেন।
ই-বই বিতান নিয়ে তরুণ এই ব্যবসায়ী বলেন, আমি দেশের অধিকাংশ কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়েছি। প্রায়ই দেখি এসব বই নিকটস্থ লাইব্রেরিতে সবসময় পাওয়া যায় না। বইয়ের জন্য অনেক দূরের শিক্ষার্থীদের ঢাকায় আসতে হয়। আবার অনেকেই বিভিন্ন মাধ্যমে প্রতারিতও হন। এসব ভেবেই চালু করেছি ই-বই বিতান। অনলাইন বুকশপ পেশা নয়, সেবা হিসেবে নিয়েছি।
শুধু বই বিক্রিই করছে না, অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই পাঠাচ্ছেন তিনি। এ বিষয়ে তৌহিদুজ্জামান বলেন, সবার অবস্থা এক নয় কিন্তু ভালো স্বপ্ন থাকে সবারই। আমি আমার ক্ষুদ্র লভ্যাংশ থেকে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই পাঠানোর ব্যবস্থা করছি। আগামীতেও এচেষ্টা চালিয়ে যাবো।
লেখক: তানজিদ শুভ্র, শিক্ষার্থী, ফুলবাড়ীয়া রয়েল কলেজ।