ক্যাম্পাস

স্বপ্ন পূরণের পথে আজমিনুর ওয়ারিছ

আজমিনুর ওয়ারিছ (Ajminur Oarish) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একজন পরিচিত মুখ। চলতি প্রজন্মের অত্যন্ত পরিচিত ও জনপ্রিয় একজন বাংলাদেশি সংগীত শিল্পী, উদ্যোক্তা ও ডিজিটাল বিপণনকারী।

তিনি ২ সেপ্টেম্বর ১৯৯৪ সালে খুলনা জেলার কয়রা উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্রাবস্থা থেকেই মিউজিক এবং ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে আগ্রহ তাকে এই মাধ্যমে পরিচিত মুখ করে তুলেছে। দেখতে দেখতে ৮ বছরের পথচলায় আজমিনুর ওয়ারিছ এখন একাধারে একজন জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী, সফল উদ্যোক্তা এবং ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। 

‘Ajminur Oarish’ নামে নিজের একটি ফেজবুক প্রোফাইল দিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন এই যুবক। শুরুতে ফেসবুকের সুরক্ষাজনিত সমস্যা সমাধান এবং সাইবার নিরাপত্তা তৈরির কাজ করেছেন তিনি। বিভিন্ন ধরনের এজেন্সির হয়ে কনটেন্ট প্রজেকশন এবং ডিস্ট্রিবিউশনের মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিংও করেন। এছাড়া বিভিন্ন পণ্যের প্রমোশন করে থাকেন অনলাইনের মাধ্যমে। ডিজিটাল চ্যানেল ব্যবহার করে পণ্যের প্রমোশন করাই হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং।

ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক সংগীত প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব মিউজিক, অ্যাপল মিউজিক, আমাজন মিউজিক, ডিজার এবং স্পটিফাইয়ের অফিসিয়াল শিল্পী হিসাবে ভেরিফাইড করা হয়েছে আজমিনুরকে। ২০২১ সালের জুন মাসে ইউটিউবে অফিসিয়াল শিল্পী চ্যানেল হিসেবে ভেরিফায়েড হয়েছিল তার চ্যানেল এবং সম্প্রতি তিনি স্পটিফাই থেকে শিল্পী যাচাই-বাছাইয়ে স্থান পেয়েছেন।

ইতোমধ্যে আজমিনুরের ২০টিরও বেশি গান এবং ২টি একক অ্যালবাম বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগীত স্ট্রিমিং মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে এবং ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। তার আরও একটি একক সংগীত অ্যালবামের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, খুব শিগগিরই সেটি প্রকাশ পাবে।

তিনি ২০২০ সালে তার সংগীত ও ডিজিটাল বিপণন তার নিজের ডিজিটাল বিপণন সংস্থা ‘AJMINUR OARISH MUSIC’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শুরু করেছিলেন। ডিজিটাল মিডিয়ায় নিজের ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে আজমিনুর বলেন, আমি প্রচুর প্রোডাকশন হাউসের সঙ্গে কাজ করেছি। তবে এখন নিজের প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজ করার সময় এসেছে।

সংগীত পরিচালনা সম্পর্কে আজমিনুর বলেন, সংগীত পরিচালনা অসম্ভব কঠিন একটা বিষয়। সেইসঙ্গে সংগীত পরিচালক হওয়াটাও। আমি মনে করি, সংগীত পরিচালক তিনিই হতে পারেন, যিনি সংগীতের আগাগোড়া বোঝেন। আমি এখনো শিখছি। জানার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আমি কিছু কিছু বিষয় বুঝি। বলতে পারি, অনেকের চেয়ে একটু ভালোই বুঝি। যেমন একটা ইনস্ট্রুমেন্ট কিভাবে বাজায়, বা বাজানোর প্রক্রিয়াটা কী, সেটা আমার জানা আছে। আবার অনেকগুলো ইনস্ট্রুমেন্ট আমি নিজেও বাজাতে পারি। তাই হয়তো আমার ক্ষেত্রে সংগীত পরিচালনাটা অন্য অনেকের চেয়ে খানিকটা সহজ। তারপরও আমি মনে করি, এটা অনেক দায়িত্বপূর্ণ একটা জায়গা, হেলাফেলার নয়। ডিরেক্টর হওয়া বা একজন মিউজিক কম্পোজার হওয়া অনেক কঠিন একটা বিষয়। তাই সারাজীবন এটা শিখে যেতে চাই।

করোনা পরিস্থিতিতে ডিজিটাল মাধ্যমে কাজের অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, মহামারি পরিস্থিতিতে বাড়ির বাইরে স্বাভাবিক কাজ করা সম্ভব নয়। আপনি যদি কোনো প্রযোজনা সংস্থায় কাজ করতে চান, তবে আপনাকে সেখানে যেতে হবে। তাই আমি এই মুহূর্তে ইউটিউব, স্পটিফাই এবং আইটিউনস এবং সমস্ত স্ট্রিমিং অ্যাপ্লিকেশনগুলোর মাধ্যমে বাড়িতে থেকেই গান প্রকাশের চেষ্টা করছি। এ অবস্থায় এগুলোই সেরা মাধ্যম বলে আমি মনে করি।

আজমিনুর ওয়ারিছের পরিকল্পনা স্পোটিফাই, আইটিউনস, অ্যাপল, অ্যামাজন, টিডাল, ডিজারসহ অন্যান্য সমস্ত আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে তার গানগুলো সংরক্ষণ করার এবং ভবিষ্যতে তার মতো দেশের অন্যান্য শিল্পী উদ্যোক্তারাও এইভাবে তাদের গান প্রকাশ করবেন। 

তিনি বলেন, স্বপ্ন প্রত্যেকে দেখেন কিন্তু বাস্তব করাটা কঠিন। আমার দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন ছিল ভালো প্ল্যাটফর্মে কাজ করার এবং আমি সে অনুযায়ী কাজ করে চলেছি। আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আমার ভক্তদের সামনে আরও ভালো ভালো কাজ উপহার দিয়ে যেতে চাই।

লেখক: ফিচার লেখক ও গণমাধ্যমকর্মী।