কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সোমবার (২০ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিরুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
অফিস আদেশে বলা হয়, শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত ও আবাসিক শিক্ষার্থীরাই হলে অবস্থান করতে পারবেন। আরো বলা হয়, কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এ বিষয়ে কাজী নজরুল ইসলাম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আব্দুল আল মাছুম বলেন, ‘এটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের খুবই ভালো উদ্যোগ। যাতে কোনো বহিরাগত, অছাত্র, সন্ত্রাসীরা এসে ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে তার জন্য কর্তৃপক্ষের আরো জোরালো দৃষ্টি দেওয়া দরকার। অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন প্রশংসনীয় কাজের জন্য ধন্যবাদ জানাই।’
এর আগে গত ৮ মার্চ দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় ছাত্রলীগের তিন নেতাকে প্রকাশ্যে মারধর করে গুরুতর আহত করেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজা-ই-এলাহী সমর্থিত কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদলের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের নেতা রনি মজুমদার এবং কুবি শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা খালেদ সাইফুল্লাহ হত্যা মামলার প্রধান আসামী ছাত্রলীগ নেতা বিপ্লব চন্দ্র দাস, অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী কাওসার হোসেনসহ ১০-১২ জন ছাত্রদল-ছাত্রলীগ নেতাকর্মী। এতে গুরুতর আহত হন শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত উল্লাহ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সালমান হৃদয়, বিজ্ঞান অনুষদ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাইদুল ইসলাম রোহান।
এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল, কনসার্ট ফর জাস্টিস, প্রক্টরের পদত্যাগসহ পাচঁ দফা দাবিতে প্রথমে উপাচার্য বরাবর স্মরকলিপি প্রদান করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিচারের দাবিতে টানা ১০দিন বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেও বিচার না পাওয়ায় আমরণ অনশনে বসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ শিক্ষার্থী। অবশেষে তাঁদের ৪টি দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে ২৩ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙেন শিক্ষার্থীরা।
এছাড়া গত ৩০ জানুয়ারি রাতে ছাত্রলীগের ২০১৭ সালে বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেজা-ই-এলাহী চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও সাবেক শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে অবৈধভাবে উঠতে গেলে তাদেরকে বাধা দেন সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সমর্থিতরা।
এর আগে ২০২২ সালের অক্টোবরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকীর সামনে দিয়েই শতাধিক বহিরাগত নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে অস্ত্রের মহড়া দেয় ছাত্রলীগের একটি অংশ। ক্যাম্পাসে প্রবেশের পরই ফাঁকা গুলি ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় তারা। এ অংশের নেতৃত্বে ছিলেন রেজা-ই-এলাহী সমর্থিত খালেদ সাইফুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি এবং মারধরকারী বিপ্লব চন্দ্র দাস।