ক্যাম্পাস

১৮ বছরে সিকৃবি: অনাড়ম্বর আয়োজনে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনাড়ম্বর আয়োজনে পালিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) সকাল ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন প্রাঙ্গণ থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা শুরুর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে শুরু করে ফুচকা চত্বরে এসে শেষ হয়। এরপর পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জামাল উদ্দিন ভুঞা। এর পর কেক কাটা ও শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন– বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আতিকুজ্জামান, প্রক্টর ড. মো. মনিরুল ইসলাম সোহাগ, রেজিস্ট্রার মো. বদরুল ইসলাম শোয়েব, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. শাহ আলমগীর, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. সাদ উদ্দিন মাহফুজ, গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. শহীদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আবু জাফর ব্যাপারীসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ, দপ্তর প্রধান বৃন্দ, সিকৃবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আশিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইমাদুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন লেভেল ও অনুষদের শিক্ষার্থীবৃন্দ।

এমন অনাড়ম্বর আয়োজনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক অনেক শিক্ষার্থী।  সাবেক শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে কোনো প্রোগ্রামই হচ্ছে না। প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে প্রোগ্রাম নেই এটা কোনোভাবেই মানা যাচ্ছে না। এখানে কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতার অভাব স্পষ্টতই প্রতীয়মান হচ্ছে।

তারা আরো জানান, শুধু এবার না ২০১৬ সালের পর আর জাঁকজমকভাবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন হয়নি। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বিগত সময়ে কয়েকটি কনসার্ট আয়োজন হলেও বরাবরের মতই এবারও ঢিলেঢালাভাবে আয়োজন হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বর্তমান শিক্ষার্থী জানান, আমরা টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় এমনিতেও ক্লাস-ব্যবহারিকের চাপে খুব একটা উৎসব আয়োজনের সুযোগ পাই না। তাই সবাই অনেক অপেক্ষা করে থাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর জন্য।

তবে এত আশা নিয়ে অপেক্ষা করার পর যখন দেখি শুধু কেক কাটা ও পায়রা অবমুক্তকরণের মাধ্যমে আমাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন সম্পন্ন করা হয়। তখন বিষয়টা আমাদের খুব হতাশ করে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জামাল উদ্দিন ভুঞা বলেন, ‘বড় করে অনুষ্ঠান করার পিছনে সবচেয়ে বড় যে দুইটি প্রতিবন্ধকতা এবার দেখা দিয়েছে তার একটি হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক সামর্থ্য ও দেশের বর্তমান পরিস্থিতি। দেশে বর্তমানে একটি রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে। আমার অনেক শিক্ষার্থীরা অবরোধের কারণে ক্লাসে আসতে পারছে না। পাশাপাশি সরকার থেকে এখন এমন আয়োজনগুলোর ক্ষেত্রে স্বল্প বাজেট ব্যবহারের কথা বলা আছে। তাই এমন একটি পরিস্থিতিতে আমরা জাকজমকভাবে আয়োজন করে অনুষ্ঠান উদযাপন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

তাছাড়া ১৭ বছর উদযাপন এমন কোনো সিগনিফাইং কোনো সংখ্যা না। আমরা ২০ বছর, ২৫ বছর এমন মাইলফলকগুলো বেশ বড়ো করে আয়োজন করবো। তবে শিক্ষার্থীদের হতাশার কথা  চিন্তা করে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি শান্তিময় থাকলে আমরা আসন্ন স্নাতক শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ অনুষ্ঠানটি অত্যন্ত জাকজমকভাবে আয়োজনের কথা ভাবছি।’