ক্যাম্পাস

ফানুশ-আতশবাজিতে ছেয়ে গেছে পুরান ঢাকার আকাশ

ঘুড়ি ওড়ানোর উন্মাদনা আর গান-বাজনার তালে সাকরাইন উদযাপন করছেন পুরান ঢাকাবাসী। দিনভর ঘুড়ি উড়িয়ে সন্ধ্যায় বর্ণিল আতশবাজি আর রঙ-বেরঙের ফানুস উড়িয়ে সাকরাইন উৎসবকে আনন্দঘন পরিবেশ তৈরি করেছেন তারা। কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতী এমনকি বয়োবৃদ্ধরাও এ উৎসবে শামিল হয়েছেন। দিনভর ঘুড়ি উড়িয়ে সন্ধ্যার পর থেকে বিভিন্ন আয়োজনে সবাই আনন্দে মেতে ওঠেছেন তারা। চলবে গভীর রাত অবধি।

পুরান ঢাকা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দিনভর ঘুড়ি উড়ানোর পাশাপাশি রাতের বর্ণিল আতশবাজি ও রঙবেরঙ ফানুশে ছেয়ে যায় বুড়িগঙ্গা তীরবর্তী শহরের আকাশ। সাকরাইন হচ্ছে, এক ধরনের ঘুড়ি উৎসব। বাংলাদেশে শীত মৌসুমের বাৎসরিক উদ্‌যাপন, ঘুড়ি উড়িয়ে পালন করা হয়। তবে পুরান ঢাকায় পৌষসংক্রান্তি বা সাকরাইন সার্বজনীন ঢাকাইয়া উৎসবের রূপ নিয়েছে।

পুরান ঢাকার শাঁখারি বাজারের স্থানীয় বাসিন্দা রাজ মিয়া রাইজিংবিডিকে বলেন, সাকরাইন মূলত পৌষ সংক্রান্ত উৎসব। আমাদের বাপ-দাদারা পালন করছে, এখন আমরাও করছি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সাকরাইন এখন পুরান ঢাকার সার্বজনীন উৎসবে রূপ নিয়েছে। আমরা পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছি সারাদিন। রাতে পারিবারিকভাবে শুরু হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। রাতে আমরা আতশবাজি, ফানুস ওড়ানোসহ বারবিকিউ পার্টির সঙ্গে সবাই মিলে নাচানাচি করব এবারের সাকরাইনে।

স্থানীয় এক তরুণ বলেন, সন্ধ্যার পর অধিকাংশ বাসার ছাদেই গান বাজানো হয় আর পিঠার আয়োজন তো থাকছেই।

জানা যায়, পুরান ঢাকার জামাইরা পৌষ মাসের শেষে শ্বশুরবাড়ি আসতেন। তখন তারা ঘুড়ি ও নাটাই নিয়ে উৎসবে মাততেন। সব বাড়ির জামাই ঘুড়ি ওড়ালে উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে তা দেখতেন এলাকাবাসী। কালের বিবর্তনে সেই দৃশ্য এখন চোখে পড়ে না।

আরও জানা যায়, ১৭৪০ তারিখে এই দিনে মোঘল আমলে নাজিব-ই-নাজিম নওয়াজেশ মোহাম্মদ খান আমলে ঘুড়ি উড়ানো হয়। এই দিনটি করে বর্তমানে এটি একটি কেন্দ্রের ও আমেজের মধ্যে পরিণত হয়েছে এবং সেটি সাকরাইন উৎসব হিসেবে পালন করে থাকে।

এদিন বংশাল, শাঁখারীবাজার, রায়সাহেব বাজার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, বাংলাবাজার, সূত্রাপুর, গেন্ডারিয়া, ধোলাইখাল এলাকায় মানুষ সারাদিন ঘুড়ি উড়ার পাশাপাশি ধর্ম-বর্ণ ভেদাভেদ না করে সবাই এই পালন করে থাকে।