ক্যাম্পাস

রাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু: একমাসেও শেষ হয়নি তদন্ত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী ফুয়াদ আল খতিবের মরদেহ শহীদ শামসুজ্জোহা হলের ১৮৪ নম্বর রুম থেকে উদ্ধার করা হয়। তিনি ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। তার মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল হল প্রশাসন।

ওই সময় ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হয় কমিটিকে। তবে কমিটি গঠনের এক মাস চারদিন পেরিয়ে গেলেও তদন্ত প্রতিবেদনের কাজ এখনো শেষ হয়নি বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন শহীদ শামসুজ্জোহা হলের আবাসিক শিক্ষক ও তদন্ত কমিটির সদস্য ড. মো. ইসমাইল হোসেন।

তিনি বলেন, তদন্ত কমিটি গঠনের পর আহ্বায়ক কিছুদিন হলে ছিলেন না। তিনি আসার পর আমরা কাজ শুরু করেছিলাম। কিন্তু ক্যাম্পাস শীতকালীন ও জাতীয় নির্বাচনের ছুটি থাকায় শিক্ষার্থীরা বাড়িতে চলে যায়। হলে শিক্ষার্থীদের না পাওয়ায় তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করা সম্ভব হয়নি। ফলে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তবে বন্ধের মধ্যেও আমরা তদন্তের কাজ কিছুটা এগিয়ে রেখেছি। এখন ক্যাম্পাস খোলা হয়েছে। আবারও তদন্তের কাজ শুরু করেছি। দ্রুত প্রতিবেদনের কাজ শেষ হবে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে শামসুজ্জোহা হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মো. একরামুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শীতকালীন ও নির্বাচনের ছুটি থাকায় হয়তো তদন্ত প্রতিবেদনের কাজ শেষ করতে কিছুটা দেরি হচ্ছে। এ বিষয়টি আমার মাথায় আছে। আগামীকাল এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিবো। তবে আমরা এখনো ফরেনসিক রিপোর্ট পাইনি। এ বিষয়ে মতিহার থানার এডিসির সঙ্গে কথা হয়েছে। তারাও জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। ফলে এখনো কিছু জানা যায়নি। কিছুদিনের মধ্যেই হল প্রশাসনের তদন্ত শেষ হয়ে যাবে।

তদন্ত প্রতিবেদন বিলম্ব করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন মৃত ফুয়াদের পরিবার। এ বিষয়ে ফুয়াদের ভাই মো. আব্দুল ফাত্তাহ্ রাফি বলেন, হল থেকে বলা হয়েছিল ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবে। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জেনেছি এখনো প্রতিবেদনের কাজ শেষ করেনি প্রশাসন।

তিনি বলেন, আমার ভাই হলের মধ্যে রহস্যজনকভাবে মৃত্যু বরণ করেছে। এ নিয়ে প্রশাসনের কোনো মাথা ব্যাথা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় এমন গাফিলতি মেনে নেওয়ার মতো না। তদন্ত প্রতিবেদন ও ফরেনসিক রিপোর্টের মাধ্যমে আমার ভাইয়ের মৃত্যুর আসল কারণ জানতে চাই আমরা।

এর আগে, গত ১০ ডিসেম্বর বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুজ্জোহা হলের ১৮৪ নম্বর কক্ষের শিক্ষার্থী ফুয়াদ আল খতিবকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তার সহপাঠীরা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় গত ১২ ডিসেম্বর হলের আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবিরকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের এ কমিটি গঠন করে হল প্রশাসন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন আবাসিক শিক্ষক মো. রবিউল ইসলাম, ড. মো. ইসমাইল হোসেন ও কে. এম. মনিরুল ইসলাম।