ক্যাম্পাস

পাঠাগারে আগ্রহ কমেছে পাঠকদের

শরীয়তপুর সদর পৌরসভার মধ্যে অবস্থিত জেলার একমাত্র ভাষা সৈনিক ডা. গোলাম মাওলা সরকারি গণগ্রন্থাগার। ৪২ হাজার ২১৬টি বই রয়েছে এখানে। ডিজিটাল বই পড়ার জন্য রয়েছে এখানে একটি আধুনিক কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংযোগ। এছাড়াও নিয়মিত প্রকাশিত ১১টি জাতীয় দৈনিক ও আঞ্চলিক পত্রিকা পড়ারও সুযোগ রয়েছে এ গ্রন্থাগারে। নিরিবিলি পরিবেশে বই পড়ার জন্য রয়েছে ১১০টি আসন। গ্রন্থাগারটির এখন পর্যন্ত নিবন্ধিত পাঠক ৫১ জন।

এতো আয়োজন থাকলেও পাঠকের অভাবে গ্রন্থাগারের অধিকাংশ বই পড়ে আছে বুক সেলফে। তবে পাঠকরা বলছেন, গণগ্রন্থাগারে সব ধরনের বই না পাওয়ায় অনলাইন মাধ্যম ও মোবাইল ই-বুক এখন জনপ্রিয় তাদের কাছে।

এ বিষয়ে পাঠকদের সঙ্গে কথা হয় রাইজিংবিডির। তারা রাইজিংবিডিকে বলেন, বই অনলাইনে পিডিএফ আকারে আছে। অনলাইনে বুকিং এর মাধ্যমে পেমেন্ট করে বই নিয়ে বাসায় বসে পড়তে পারি। এজন্য সেরকম লাইব্রেরিতে যাওয়া হয় না‌। যুগের সঙ্গে মিল রেখে আমরা যে বইগুলো চাচ্ছি, সেগুলো লাইব্রেরিতে নেই। সে কারণেই অনলাইনে আমরা বইগুলো কিনে পড়ছি।

তারা আরও বলেন, আপডেট বইয়ের সংখ্যা কম। এই সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। পাশাপাশি লাইব্রেরির উন্নয়ন দরকার। তাহলে আবার মনে হয় পাঠকরা আগের পরিবেশে ফিরে যেতে পারবে।

এদিকে শিক্ষকরা বলছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আসক্তির কারণেই পাঠাগার বিমুখতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। একই সঙ্গে পাঠক চাহিদার বিবেচনায় বইয়ের সংগ্রহ বাড়াতে হবে।

এ বিষয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. হারুন আর রশিদ রাইজিংবিডিকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সেই একই বই। আপডেট ও তথ্যবহুল কোনো বই না থাকায় আমাদের সাধারণ পাঠক ও শিক্ষার্থীদের পাঠের প্রতি যে আকর্ষণ, সেটা কিন্তু থাকছে না। এই বিবর্তনের ধারাবাহিকতায় মোবাইল আসক্তি ও চাহিদানুযায়ি লাইব্রেরিতে বই না থাকায়, লাইব্রেরী পাঠক সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।

শরীয়তপুর ভাষা সৈনিক ডা. গোলাম মাওলা সরকারি গণগ্রন্থাগারের লাইব্রেরিয়ান জান্নাতুল ফেরদৌস রাইজিংবিডিকে বলেন, আমরা শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, উপস্থিত ছড়া লেখা প্রতিযোগিতা, রচনা প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকি। সেখানে আমাদের গ্রুপ করা থাকে। সেখানে সব ধরনের ছাত্রছাত্রীরা অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। আমরা মনে করি, এ ধরনের প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে আমরা পাঠকদের কাছে পৌঁছাতে পারবো এবং পাঠকরা আমাদের লাইব্রেরিমুখী হবে।

তিনি আরও বলেন, পাঠকদের চাহিদা চাকরির বই, আইনের বই। কিন্তু আমাদের এখানে সাহিত্য রিলেটেড বইগুলো বেশি। এছাড়া রয়েছে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বই, ইতিহাসের বই। পাঠকদের পাঠাগারমুখী করার জন্য আমরা একাডেমিক বইগুলো রেখেছি। ডিজিটাল লাইব্রেরির অনেক সুবিধা রয়েছে। একজন পাঠক বাসায় বসে আমাদের লাইব্রেরির বই পড়তে পারে। জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সেসব প্রকল্পের মাধ্যমে লাইব্রেরি অটো মেশিন এবং ডিজিটাল লাইব্রেরি করা হবে। যাতে পাঠকরা বাসায় বসে বই পড়তে পারে।