ক্যাম্পাস

দীর্ঘদিন বন্ধে জরাজীর্ণ ইবির ক্যাফেটেরিয়া 

কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। প্রায় এক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সেই কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া। ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে বাইরের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের হোটেল ও দোকানগুলো থেকে মানহীন খাবার কিনে খেতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে জীবন কাটাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে দিনের পর দিন বন্ধ ক্যাফেতে পড়েছে ধূলোর আস্তরণ।

সরজমিনে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে অবস্থিত কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ পাওয়া যায়। এলোমেলো চেয়ার-টেবিলগুলোই জানান দিচ্ছে দীর্ঘদিনেও শিক্ষার্থীদের পদচারণা পড়েনি এখানে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনা পরবর্তী এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধকালীন সময়ে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ২০২৩ সালের ১২ মার্চ লোকসান হয় ক্যাফেটেরিয়ায়। এতে ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনা করতে অপারগতা প্রকাশ করে অব্যহতি পত্র দেন সাবেক ম্যানেজার আরিফুল ইসলাম কলম। দীর্ঘ পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর গত ২৭ আগস্ট আবারও চালু হয় এটি। কিন্তু মাস না পেরোতেই আবারও পদ থেকে ইস্তফা দেন নতুন ম্যানেজার রাজিব মণ্ডল। সেই থেকে এখনো বন্ধ আছে ক্যাফেটি।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, ক্লাস-পরীক্ষার ফাঁকে আড্ডা দেওয়ার অন্যতম জায়গা এটি। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় বাইরের দোকান থেকে বেশি দামে খাবার কিনতে হচ্ছে। এতে সময় এবং অর্থ যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি নোংরা পরিবেশে তৈরি মানহীন খাবারে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। এছাড়া, বসার মতো উপযুক্ত জায়গা না থাকায় গাছতলায় দাঁড়িয়ে খাওয়া-দাওয়া করতে হয়। এটিও ভোগান্তির অন্যতম কারণ।

এ বিষয়ে ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলিনা নাসরীন বলেন, ক্যাফেটেরিয়া একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খাবারের বিকল্প যে ব্যবস্থা, শিক্ষক শিক্ষার্থীরা সেটি এখানেই খোঁজে। কিন্তু খাবারের মানের দিকটি বিবেচনা করে আমরা যে নীতিমালা অনুযায়ী দরপত্র আহ্বান করি, তাতে সাড়া পাওয়া যায় না। তবে লোক পাওয়া যাচ্ছে না বলে যে আমরা থেমে যাব, এমনটি ভাবার কারণ নেই। কমিটির সদস্যরা বসে পরবর্তী করণীয় ঠিক করবো।

জানতে চাইলে টিএসসিসির পরিচালক ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল বলেন, একটি ক্যাফেটেরিয়া তো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ। অনেক প্রচেষ্টার পর আমাদের ক্যাফেটেরিয়া চালু করা হয়েছিল। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে আমরা খাবারের মান ও দাম নির্ধারণ করে দেই। কিন্তু ভর্তুকি না থাকায় যারা ক্যাফেটেরিয়া চালাতে আসেন, তারা লোকসানের অজুহাত দিয়ে চলে যান। এখন চালানোর মতো ম্যানেজার না থাকলে তো আমাদের করার কিছু থাকে না। এখন অন্য কোনো উপায়ে ক্যাফেটেরিয়া চালু করা যায় কিনা, সেই প্রচেষ্টা অব্যহত আছে।