ক্যাম্পাস

সফলতার এক যুগে জাবি প্রেসক্লাব

বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতায় অনন্য নজির স্থাপন করে এক যুগ পার করলো দেশের ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের অন্যতম সংগঠন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব (জেইউপিসি)। ২০১২ সালের ২১ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়ে হাঁটি হাঁটি পা-পা করে সব বাধা-বিপত্তিকে উপেক্ষা করে এক যুগ অতিক্রম করায় বর্ণাঢ্য আয়োজনে যুগ পূর্তি উৎসব উদযাপন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব।

দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে রোববার (২১ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার কনফারেন্স লাউঞ্জে কেক কেটে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নুরুল আলম।

আলোচনা সভায় প্রেসক্লাবের সভাপতি শিহাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক হাসিব সোহেলের সঞ্চলনায় প্রধান আলোচক ছিলেন দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত।

প্রেসক্লাবের উপদেষ্টা অধ্যাপক শফি মুহাম্মদ তারেক তার বক্তব্যে বলেন, জাবি প্রেসক্লাব এক যুগে পদার্পণ করলো। সংবাদ পরিবেশনে জাবি প্রেসক্লাব অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। একজন সংবাদ কর্মী অনেক তথ্য-উপাথ্য যাচাই বাচাই করে গবেষণার মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করতে হয়। সেই কঠিন‌ কাজটি প্রেসক্লাবের সদস্যরা করে থাকে। তাদের অবশ্যই  হলুদ সাংবাদিকতা থেকে দূরে থাকতে হবে, ভুল তথ্য যেন না প্রকাশ পায়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম বলেন, সাবেক উপাচার্য শরীফ এনামুল কবীরের হাত ধরে প্রেসক্লাব গড়ে উঠে। এই সংগঠন সৃষ্টিতে তখন আমারও ভূমিকা ছিল। জাবি প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা শুধু সাংবাদিকই নয়, শিক্ষার্থীও। লেখাপড়ার পাশাপাশি পরিশ্রম করে তারা সাংবাদিকতাও চালিয়ে যান। তবে তাদের লেখনীতে মনে হয় তারা যেন জাতীয় পর্যায়ের পেশাদার সাংবাদিক।

তিনি বলেন, সাংবাদিকতা যেন গঠনমূলক হয়। সত্য প্রকাশের স্বার্থে যেকোনো প্রয়োজনে আমাদের কাছে তথ্য জানতে চাইবেন। কারও জন্য মানহানিকর হয়, এমন কিছু প্রকাশ করবেন না। আপনারা কাউকে যেমন উপরে তুলতে পারেন, তেমনি নিচেও নামাতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মানসম্মান যেন বৃদ্ধি পায় সেই দিকে লক্ষ্য রাখবেন।

পরে উপাচার্যের উপস্থিতিতে ক্যাফেটেরিয়ার সামনে থেকে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়ে শিক্ষক-ছাত্র কেন্দ্রে (টিএসসি) গিয়ে শেষ হয়।

শিক্ষক ছাত্র কেন্দ্রে জাবি প্রেসক্লাবের কার্যালয়ে আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, সাংবাদিকতা কেন করব এটি জানা জরুরি। দশ বছর পর হয়তো পত্রিকা বলতে কিছু থাকবে না। বিশ বছর পর হয়তো টেলিভিশন বলতেও কিছু থাকবে না। বর্তমান জেনারেশনের কেউ পত্রিকা পড়ে না। আমাদের জেনারেশনের বেশকিছু মানুষের এখনো পত্রিকা পড়ার অভ্যাস রয়ে গেছে। এরপরেও যারা সাংবাদিক পেশায় আসতে চান, তাদের প্রচুর পড়তে হবে, জানতে হবে। ক্লাসিক সাহিত্য যেমন রবীন্দ্রনাথ, তারাশঙ্কর, জীবনানন্দকে নিজের মধ্যে ধারণ করতে হবে। ভালো মুভি দেখতে হবে, গান শুনতে হবে। সাংবাদিক হই না হই, নিজেকে একজন সৃজনশীল মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

এসময় আরও বক্তব্য রাখেন, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক বশির আহমেদ, প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আবদুল্লাহ হেল কাফী, সহযোগী অধ্যাপক তারিকুল ইসলাম, সুলতানা আক্তার, মোহাম্মদ কামরুজ্জামান প্রমুখ।