ক্যাম্পাস

তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীর কোলে ‘শিশুর রক্তাক্ত মরদেহ’

গ্যারেজের কোনো এক কোণে কিংবা শহরের ফ্লাইওভারগুলোর নিছে ধুলাবালিতে চাপা পড়ে থাকে আস্ত একটি গাড়ি। গ্রীষ্মের ধুলা তার শরীরে লাগনোর সৌভাগ্য হলেও বর্ষার জলের ছিটেফোঁটা পড়ে না গায়ে। কার্যত ফিলিস্তিনি মুসলমানদের পক্ষে বিশ্ব মানবতা ঢেকে আছে সেই গাড়িটির ধুলার মতোই। সেখানে গ্রীষ্ম, বর্ষা সবসময় ধুলা জমে, কিন্তু মানবতার জলকণা কখনোই পৌঁছে না।

দুষ্কৃতকারী ইহুদি সেনারা যেন মানুষ হত্যার পূর্ণাঙ্গ অধিকার নিয়ে জন্মিয়েছে। তাদের ধ্বংস যজ্ঞের প্রতি পশ্চিমা বিশ্ব মুখে কুলুপ এঁটে সমার্থন দিয়ে গেলেও রক্তক্ষরণ হয় হাজার হাজার মাইল দূরে অবস্থান করা বাংলাদেশের মুসলিমদের হৃদয়ে।

গতকাল শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সরকারি তিতুমীর কলেজের বার্ষিক ক্রিড়া প্রতিযোগিতা চলছিল আমেজ-উৎসবের ষোলকলা নিয়েই। মুহূর্তের বিষাদে ঢেকে যায় আমন্ত্রিত অতিথি এবং কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের হৃদয়।

কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী সানজিদা আক্তার নাদিয়া ‘যেমন খুশি তেমন সাজ’ ইভেন্টের প্রতিযোগিতায় ফিলিস্তিনি নারীদের ঐতিহ্যগত সাজে হাজির হন। কোলে ছিল সদ্য ড্রোন হামলায় নিহত ফুটফুটে এক নবজাতকের প্রতীকী মরদেহ। চোখে মুখে তার সন্তান হারানোর বেদনা। কপোলে লেখা- ‘ফ্রি গাজা’।

দীর্ঘদিন ক্ষুধার সঙ্গে লড়ে শিশুটির প্রাণটুকু জিইয়ে রাখতে পারলেও আজ ঘাতকের থাবায়, তা আর সম্ভব হয়নি। তিনি যেন অপরাধী। আদুরে সন্তানকে রক্ষা না করতে পারার অপরাধে অপরাধী।

এ ইভেন্টের প্রতিযোগিতা দেখে সাধারণত সবাই আনন্দ পায়, খুশি হয়। তবে সানজিদার এমন সাজ যেন তার বিপরীত। এই সাজে সবার মন নিকোষ কালো হয়ে উঠে। উপস্থিত সবার চোখেমুখে করুণ চাহনি ফুটে উঠে। এই সাজ যেন মন খারাপের সাজ।