ক্যাম্পাস

ক্রিকেট ম্যাচ নিয়ে ঢাবি-রাবির পাল্টাপাল্টি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) স্টেডিয়ামে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট প্রতিযোগিতা-২০২৪ এর ফাইনালে হামলার শিকার হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা।

গতকাল সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাবি শিক্ষার্থীদের এ হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ঢাবির  জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহমুদ আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তবে এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিকে নিন্দাজনক আখ্যায়িত করে রাবির জনসংযোগ কর্মকর্তা অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে স্বাক্ষরিত আরেকটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।

এর আগে, সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাবির শেখ কামাল স্টেডিয়ামে  আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেটের ফাইনাল খেলা চলছিল। খেলার শেষ দিকে স্বাগতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মাঠে ঢুকে পড়েন এবং ঢাবি ক্রিকেট টিমের উপর হামলা করেন। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট দলের সিফাত (সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট), ইমন (মনোবিজ্ঞান), তূর্য (পদার্থবিজ্ঞান) ও রোকনসহ (সমাজবিজ্ঞান) ৬-৭ জন শিক্ষার্থী আহত হন। এক পর্যায়ে উভয় দলকে যৌথ বিজয়ী ঘোষণা করেছে দায়িত্বরত আম্পায়াররা।

ঢাবির  জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহমুদ আলম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খেলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দল যখন বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে, ঠিক তখনই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক’শ শিক্ষার্থী মাঠে ঢুকে ঢাবি ক্রিকেট টিমের খেলোয়াড়দের উপর অতর্কিত ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং হামলা চালায়। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিমের ৫-৬জন খেলোয়াড় গুরুতর আহত হয়। এ ধরনের হামলা অখেলোয়াড়সুলভ এবং অনাকাঙ্ক্ষিত।

লিখিত এই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অতীতেও রাবি এ ধরনের প্রতিযোগিতার সুষ্ঠু আয়োজনে ব্যর্থতার পরিচয় দেয়। এর ফলে তখনও অপ্রীতিকর ঘটনার সৃষ্টি হয়।

রাবির জনসংযোগ কর্মকর্তা অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ (১২ ফেব্রুয়ারি) রাবি ও ঢাবি এর মধ্যকার ফাইনাল খেলায় পূর্ব থেকেই বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছিল। তবে খেলার চূড়ান্ত পর্যায়ে রেফারির একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত ও ঢাবির খেলোয়াড়দের অখেলোয়াড়সুলভ আচরণের প্রেক্ষিতে স্টেডিয়ামের দর্শক সারি থেকে বেশ কয়েকজন মাঠে প্রবেশ করলে এক  অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এতে খেলাটি সাময়িক বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে দুজন আম্পায়ার ও দুই দলের ম্যানেজারের সম্মিলিত সিদ্ধান্তে ম্যাচ রেফারি দুই দলকে যৌথ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করেন। রাবি উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার মাঠে থেকে অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যাটি নিরসনের চেষ্টাও চালান। এই  অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে।

ঢাবির বিজ্ঞপ্তি প্রসঙ্গে বলা হয়, ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে যে ভাষায় ঢাবি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করেছে, তা অপ্রত্যাশিত ও দুঃখজনক। এর আগেও দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় খেলাকে কেন্দ্র করে এমন  অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। সেসব স্থানে রাবির খেলোয়াড়দের উপর নির্মম হামলা চালানো হয়েছে। ঢাবির সংবাদ বিজ্ঞাপ্তিকে রাবি প্রত্যাখ্যান করছে এবং এহেন বিজ্ঞপ্তি প্রচারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

এদিকে আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলায় ঢাবি খেলোয়াড়দের ওপর রাবি শিক্ষার্থীদের হামলার ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

রাবির এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক হুমায়ুন কবিরকে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন— শহীদ জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ ড. সুজন সেন ও শরীরচর্চা শিক্ষা বিভাগের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আলী।