ক্যাম্পাস

খুবি শিক্ষার্থীদের মারধরের ঘটনায় আটক ২

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) তিন শিক্ষার্থীকে মারধরের প্রতিবাদে খুলনা নগরীর জিরো পয়েন্ট মোড় অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রায় দুই ঘণ্টা জিরো পয়েন্ট মোড়ে সড়ক অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা।

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, পাইকগাছা থেকে খুলনা আসার পথে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ডিসিপ্লিনের মাস্টার্সের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে বাসের হেলপার অশোভন আচরণ, গালিগালাজ ও হুমকি প্রদান করে। ভুক্তভুগী আতঙ্কিত হয়ে বিষয়টা সমাধানের জন্য কল দিয়ে তার দুজন জুনিয়রকে ডাকেন। তারা সেখানে পৌঁছালে বাসের স্টাফদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়।

এর একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের একজনকে কলার ধরে টেনে হিঁচড়ে বাসের মধ্যে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে বাসের স্টাফসহ আরো পাঁচ-ছয় জন সহযোগী শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণ করে। সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা পালানোর চেষ্টা করলে তাদের লক্ষ্য করে ইট-টকেল নিক্ষেপ করে তারা। এসময় ইটের আঘাতে একজন শিক্ষার্থী আহত হন।

এ মারধরের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে মারধরে জড়িতরা সংঘবদ্ধ হয়ে হামলার চেষ্টা করে। এসময় ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে আটক করে পুলিশ। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দোষীদের বিরুদ্ধে মামলা করার আশ্বাস দিলে এবং পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নিয়ে সড়ক ত্যাগ করে শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা জানান, কিছুদিন পর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এমন লাঞ্ছনা শিকার হয়, এটা খুবই দুঃখজনক। পরবর্তীতে এমন কোনো ঘটনা ঘটলে খুবি অশান্ত হয়ে উঠবে এবং পুরো খুলনা অবরোধ করা হবে।

শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব বলেন, আমরা কথা দিচ্ছি এমন অপ্রতিকর ঘটনা আর ঘটবে না। যে বা যারা এ কাজগুলো করার সাহস দেখায়, তাদের আমরা কঠোর হাতে প্রতিহত করবো। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এমন আচরণ খুবই দুঃখজনক। যারা এ কাজগুলো করেছে তাদের সবাইকে বরখাস্ত করা হবে। 

সহকারী ছাত্র বিষয়ক পরিচালক রাজু রায় বলেন, আমাদের তিন জন শিক্ষার্থীকে মারধর করলে তারা তাদের দাবি আদায়ের জন্য শান্তিপূর্ণ ভাবে রাস্তা অবরোধ করে। প্রশাসনের সহযোগিতায় এবং আমাদের আশ্বাসে তারা অবরোধ তুলে নিয়েছে।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা যদি চায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবে। আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আছি।

সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. আবু নাসের আল-আমিন জানান, আমরা খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে আসি। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ যুক্তিসঙ্গত। বাসসহ বাস চালক ও তার সহযোগীকে আমরা ধরে থানায় নিয়ে এসেছি। পরে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক শিক্ষার্থী ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সঙ্গে সমঝোতা করে কেএমপি ক্ষমতা বলে আটককৃতদের দুই দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।