শিক্ষক সমিতির বাধায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের লিখিত নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত হয়ে গেছে বলে জানা গেছে। বুধবার (৬ মার্চ) সকাল ১০টায় শুরু হওয়া এই পরীক্ষা বেলা দেড়টায় স্থগিত হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সকাল ১০টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সাড়ে ১০টায় ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের নিয়োগ পরীক্ষা শুরু হয়। এর আগে, এ পরীক্ষা বন্ধ করতে সকাল ১০টার দিকে কুবি শিক্ষক সমিতির সদস্যরা উপাচার্যের কক্ষে প্রবেশ করেন। সাড়ে ১০টায় উপাচার্য প্রশাসনিক ভবনের ৪১১ নং কক্ষে চলমান পরীক্ষা হলে গেলে সেখানে শিক্ষক সমিতির সদস্যরাও প্রবেশ করেন। এসময় তারা এই নিয়োগ পরীক্ষা অবৈধ ও প্রশ্ন ফাঁস করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনুষদের ডিন ও বিভাগটির বিভাগীয় প্রধানের অনুপস্থিতিতে এই পরীক্ষা কোনোভাবে বৈধ নয় বলেও মন্তব্য করেন শিক্ষক সমিতির সদস্যরা।
এ সময় পরীক্ষা বোর্ড কমিটির মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান। এর বাইরে দুইজন এক্সটার্নালের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন একজন। কমিটির অন্য দুই সদস্য ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. শেখ মকছেদুর রহমান এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন সরকার অনুপস্থিত ছিলেন।
নিয়োগ পরীক্ষায় বাধা দেওয়ার বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসান বলেন, 'আসলে বাধা না, আমরা অবৈধ এই নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করতে চেয়েছি। নিয়োগ সার্কুলারও তো নীতিমালা বিরোধী। আজকের এই পরীক্ষার প্রক্রিয়াও প্রশ্নবিদ্ধ। কোনোপ্রকার খাম ছাড়াই খোলা প্রশ্ন একজন কমিটির বাইরের লোককে দিয়ে পরীক্ষার হলে নিয়ে আসা হয়েছে।'
নিয়োগ বোর্ডে উপস্থিত না থাকা প্রসঙ্গে ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. শেখ মকছেদুর রহমান বলেন, ‘প্রশাসনের বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে সাধারণ শিক্ষকরা ক্ষুব্ধ। সাধারণ শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন হচ্ছে শিক্ষক সমিতি। সমিতির সেন্টিমেন্টের সঙ্গে অন্যান্য শিক্ষকদের মতো আমিও একমত। সেজন্যই আমি বোর্ডে যাই নি। যদি বিদ্যমান যেসব সংকট আছে, সেগুলো সমাধান করা হয়, তবে আমি বোর্ডে যাব। আর যতদিন এসব সমস্যার সমাধান হবে না, আমি বোর্ডে যাব না।'
এ বিষয়কে ডিনকে কল দিলে তিনি অফিসে এসে কথা বলতে বলেন। পরবর্তীতে অফিসে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।
নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন সাংবাদিকদের জানান, 'শিক্ষক সমিতি প্রশ্ন ফাঁসের যে অভিযোগ এনেছে, তা পুরোপুরি মিথ্যে ও বানোয়াট।'