ক্যাম্পাস

কোটা সংস্কারের দাবিতে ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলসহ চার দফা দাবিতে প্রায় ২ ঘণ্টা ঢাকা-রংপুর  মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

শনিবার (৬ জুলাই) দুপুরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চত্বরে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পার্কের মোড় হয়ে রংপুর নগরীরর প্রবশদ্বার মডার্ণ মোড়ে ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ সময় রাস্তার ‍দুপাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা ‘কোটা প্রথা কোটা প্রথা, মানি না মানব না’, ‘কোটা প্রথা বাতিল কর, করতে হবে’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই'সহ কোটা পুনর্বহালের বিপক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

সমাবেশে তারা চারটি দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো, ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি সংস্কার করতে হবে। কোটায় প্রার্থী না পাওয়া গেলে মেধাকোটায় শূন্যপদ পূরণ করতে হবে। ব্যক্তি তার জীবদ্দশায় সব ধরনের সরকারি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় একবার কোটা ব্যবহার করতে পারবে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষাও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। প্রতি জনশুমারির সঙ্গে অর্থনৈতিক সমীক্ষার মাধ্যমে বিদ্যমান কোটার পুনর্মূল্যায়ন নিশ্চিত করতে হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জাকের হোসেন বলেন, আমাদের ওপর হাইকোর্ট যে রায় চাপিয়ে দিয়েছেন, আমরা সেটা মানি না। যারা কোটাধারী মেধাবী পরিচয় দিতে চান, তাদেরকে বলতে চাই, এই পরিচয় খুবই লজ্জার। কোনো বৈষম্যহীন রাষ্ট্রে ৫৬ শতাংশ কোটা থাকতে পারে না। তীব্র আন্দোলনের মুখে সরকার যেখানে কোটা পদ্ধতি বাতিল করেছিল, হাইকোর্ট কেনো সেই কোটাকে আবার পুনর্বহাল করলেন, আমরা জানি না। যতক্ষণ না পর্যন্ত আমাদের দাবি না মানা হবে, ততক্ষণ আমরা রাজপথ ছাড়বো না।

অন্দোলনের অন্যতম সংগঠক বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শামসুর রহমান সুমন বলেন, এ বৈষম্য আমরা কখনো মানব না। ২০১৮ সালে আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সে সময় কোটা পদ্ধতি বাতিল করে। কিন্তু আজ হাইকোর্ট সেটা পুনর্বহাল করেছেন। হাইকোর্টের রায়কে প্রত্যাখ্যান করছি। সব যৌক্তিক আন্দোলনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। আমাদের দাবি না মানলে বেরোবির শিক্ষার্থীরা রাজপথ ছাড়বেনা।

তিনি আরও বলেন, কোনো দুষ্কৃতিকারী আমাদের আন্দোলনের মাঝে ঢুকে যেন এটিকে নষ্ট করে না দিতে পারে, সেদিকে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন আমরা একের পর এক কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।

পরে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দরা এসে জনদুর্ভোগ এড়িয়ে শান্তি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে শিক্ষার্থীদের সড়ক থেকে ক্যাম্পাসে সড়িয়ে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।