ক্যাম্পাস

মহাখালীতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে শ্রমিক লীগ ও পুলিশের সংঘর্ষ

রাজধানীর মহাখালীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শ্রমিক লীগের নেতা-কর্মী ও পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেল ৩টার পর রাজধানীর মহাখালীর আমতলী ও রেল গেইটে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে মহাখালী। সংঘর্ষ চলাকালে দুটি মোটরসাইকেলে আগুন দিয়েছে দূর্বৃত্তরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরের দিকে বিভিন্ন সড়কের মতো রাজধানীর মহাখালীতে রেললাইন অবরোধ করেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। ফলে কমলাপুরে রেলস্টেশনে কোনো ট্রেন ঢুকছে না, বেরও হতে পারছে না। এতে ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।

এসময় মহাখালী আমতলী ও রেইলগেইটে অবস্থান নেন শ্রমিক লীগসহ সরকার দলীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। এক পর্যায়ে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে তাদের সংঘর্ষ শুরু হয়। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াসহ উভয় পক্ষই একে অপরকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে দেখা যায়। এছাড়া ট্রাফিক বক্সের পাশে দুটি মোটরসাইকেলে আগুন জ্বলতে দেখা যায়।

এদিকে সকালে কলেজের মূল ফটকের সামনে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া জানানোর কারণে তিতুমীর কলেজের এক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। তবে দুপুরে ঢাবির রাজু ভাস্কর্যে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কর্মসূচি থাকায় তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সেখানে চলে যায়। বিকেলের দিকে তাদের মহাখালীতে দেখা যায়নি।

ছাত্রলীগের মারধরে আহত ইব্রাহিম সাকিব কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ট্রাফিক-গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) এ এস এম হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, মহাখালী ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে দুটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়েছে। মোটরসাইকেল দুটির মালিক কারা তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, গত রোববার চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রসঙ্গে করা এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা কিছুই পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা সব পাবে?’

প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা বা নাতিপুতি’ বলা হয়েছে অভিযোগ করে গত রোববার রাত থেকে প্রতিবাদ শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। একই সময়ে মধ্যরাতে চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন।

একই ইস্যুতে সোমবারও (১৫ জুলাই) উত্তাল হয়ে ওঠে ঢাবিসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়। এ সময় বেশ কয়েক জায়গায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়।