ক্যাম্পাস

তিতুমীর কলেজে সমন্বয়ক পরিচয়ে রুম দখলের প্রতিবাদে মানববন্ধন

সমন্বয়ক পরিচয় ব্যবহার করে প্রভাব খাটিয়ে নাম সর্বস্ব ক্লাবের নামে রুম বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সরকারি তিতুমীর কলেজের রেজায়ে রাব্বী জায়েদ নামের এক সমন্বয়কের বিরুদ্ধে। এর আগে নানা অভিযোগে সমালোচিত হন জায়েদ।

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে প্রভাব খাটিয়ে রুম দখলের প্রতিবাদে মানববন্ধনের আয়োজন করে কলেজটির সব ক্লাব ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, কলেজটিতে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মিলিয়ে মোট ১৮টিরও বেশি সংগঠন রয়েছে।কিছুদিন আগে কয়েকটি ক্লাবকে রুম বরাদ্দ দেয় কলেজ প্রশাসন।সেখানে দেখা গেছে, বিজ্ঞান ক্লাব নামে একটি ক্লাব রুম পেলেও কলেজটিতে আগে থেকে থাকা অনেক পুরোনো ক্লাবকে রুম দেওয়া হয়নি।

সংগঠনগুলোর সদস্যরা বলছেন, জায়েদ সমন্বয়ক পরিচয়ে প্রভাব খাটিয়ে বিজ্ঞান ক্লাবের নামে একটি রুম দখল করেছে‌।কলেজের উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ মহিউদ্দিনও জায়েদের প্রভাব খাটানোর কথা স্বীকার করেছেন।

মানববন্ধনে অংশ নিয়ে তিতুমীর কলেজ রিসার্চ ক্লাবের সভাপতি আলী আহমেদ বলেন, রুম বরাদ্দের বিজ্ঞপ্তিতে একটা নতুন ক্লাবের নাম দেখেছি যার কোনো কার্যক্রম ইতিপূর্বে আমরা দেখিনি।এ বিষয়ে প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করেছি তারা জানিয়েছেন বিজ্ঞান ক্লাব নামে যে ক্লাবটা আছে সেটার কোন ধরনের কার্যক্রম না থাকলেও একজন সমন্বয়ক উপাধ্যক্ষকে জোরপূর্বক বাধ্য করে সে রুমটাকে বিজ্ঞান ক্লাবের নামে লিখিয়ে নিয়েছেন।

ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ ক্লাবের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া মোয়াজ বলেন, সমন্বয়ক নাম করে আমাদের ক্যাম্পাসে আবার ছাত্রলীগের মতো দখলদারিত্ব শুরু হয়েছে।আমরা চাই না ক্যাম্পাসে আবার বৈষম্য তৈরি হোক, কোনো দখলদারিত্ব আমরা দেখতে চাই না।

বাঁধনের সাবেক সভাপতি সোহেল মৃধা বলেন, আমরা যে নতুন বাংলাদেশের সপ্ন দেখেছি আন্দোলন সংগ্রাম করেছি দেশকে নতুন রূপে স্বাধীন করেছি। আগে দেখতাম  ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ তারা জোরপূর্বক প্রভাব বিস্তার করতো ক্যাম্পাসে।তাদের আমরা সরাতে পেরেছি কিন্তু একইভাবে দেখতে পাচ্ছি সমন্বয়ক দাবি করে ক্যাম্পাসে এসে যে সংগঠনের নামে কোনো কার্যক্রম হচ্ছে না সেই সংগঠনের নামে রুম বরাদ্দ নিয়েছে। যে সংগঠনের ব্যানারে তারা রুম বরাদ্দ নিয়েছে সে সংগঠন ছিল বলে আমরা জানতাম না।

তিতুমীর নাট্যদলের সভাপতি ওয়ালীউল্লাহ তুহিন বলেন, স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে আমরা সবাই লড়েছি। কোনো সমন্বয়ক যদি স্বৈরশাসন কায়েম করতে চায়, ব্যক্তি স্বার্থ কায়েম করতে চায়, তাহলে তিনি কীভাবে সমন্বয়ক হলেন?

বিতর্ক ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মতি বলেন, আন্দোলন শেষ হওয়ার পরে আমরা ক্যাম্পাসে আবারও বৈষম্য লক্ষ্য করি তখন মনে হয় এখনও পরাধীনতার শিখলে বন্দি আছি। আগে ক্যাম্পাসের স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী প্রভাব বিস্তার করতো তাদের প্রতিহত করলাম এখন আবার নতুন একটা গোষ্ঠী আসলো তারাও ঠিক তাদের মতো রুম দখল শুরু করলো নামে বেনামে।আমরা এ ধরনের বৈষম্য আর চাই না।

তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক সাহেদুজ্জামান সাকিব বলেন, ইতোপূর্বে দেখেছি কলেজে ছাত্রলীগ বিভিন্ন কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করতো। কিন্তু পরিবর্তী পরিস্থিতিতে এসেও ছাত্রলীগের মতো কেউ প্রভাব খাটিয়ে কলেজ প্রশাসনকে জিম্মি করে কোনো কাজ আদায় করবে বা কোন রুম দখল করে নেবে এটা আসলে ছাত্রসমাজ মেনে নেবে না।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিতুমীর কলেজের প্রধান সমন্বয়ক নিরব হাসান সুজন বলেন, আন্দোলন সাধারণ শিক্ষার্থীসহ সবাই করেছে।সবার অধিকার আছে স্বাধীনভাবে কথা বলার, মত প্রকাশ করার, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলার। আমরা অন্যায় কে প্রশ্রয় দেব না। সমন্বয়ক প্রভাব খাটিয়ে কেউ কিছু করতে চাইলে আপনারা আপনাদের জায়গা থেকে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।আমরা গোপন সূত্রে জানতে পেরেছি যারা সমন্বয়ক আছে তাদের প্রশ্নবিদ্ধ করে, একদল স্বার্থান্বেষী দল অছাত্ররা ক্যাম্পাসে দখলদারিত্বের রাজনীতি করতে চাচ্ছে।

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন তিতুমীর কলেজ আইটি সোসাইটি, তিতুমীর কলেজ ক্যারিয়ার ক্লাব, তিতুমীর কলেজ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ক্লাব, গ্রিন অ্যান্ড ক্লিন ক্যাম্পাস তিতুমীরসহ কলেজের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।

তবে এ বিষয়ে রাব্বী জায়েদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।