ক্যাম্পাস

বুটেক্সের উপাচার্যের পদত্যাগ চান শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একাংশ

বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহ আলিমুজ্জামানের পদত্যাগের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একাংশ। 

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ময়ের অভিযোগ তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের নিচ তলায় অবস্থান কর্মসূচি করেন তারা। পরবর্তীতে তারা মিছিল নিয়ে অ্যাকাডেমিক ভবন থেকে শুরু করে প্রশাসনিক ভবন, শহীদ মিনার এবং শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠ প্রদক্ষিণ করেন। 

অবস্থান কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ সরকার মনোনীত উপাচার্যের বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরোধিতাসহ নানা অভিযোগ উঠে আসে।

টেক্সটাইল ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বিজনেস স্টাডিস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মাসুম বলেন, আমাদের দাবি একটাই, উপাচার্যের পদত্যাগ। তার পদত্যাগ চাওয়ার কারণ হলো, তিনি বৈষম্য সৃষ্টিকারী উপাচার্য এবং তিনি বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারে ব্যর্থ। উপাচার্য ২টি গাড়ি ব্যবহার করেন- যার মধ্যে একটি কলেজ ইন্সপেক্টর ড. মোহাম্মদ আলীর এবং উপাচার্যের জন্য বরাদ্দ গাড়িটি পারিবারিক কাজে ব্যবহার করেন। এছাড়া তিনি নিয়োগ বোর্ডে পক্ষপাতিত্ব, বাজেট ভাগাভাগিতে অনিয়ম, ডিন অফিসে বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করেন।

টেক্সটাইল মেশিনারি ডিজাইন অ্যান্ড মেনটেনেন্স বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. সেখ মো. মোমিনুল আলম ডালিম বলেন, বিভিন্ন কাজে শিক্ষকদের মাঝে বৈষম্য সৃষ্টি, অনুগত শিক্ষকদের সুবিধা প্রদান, বিভিন্ন কমিটিতে সিনিয়র শিক্ষক না রেখে জুনিয়র শিক্ষক রাখাসহ আরো অন্যায়ের সাথে জড়িত বর্তমান উপাচার্য। 

তিনি বলেন, এছাড়াও বিভিন্ন ভুল তথ্য দিয়ে সবাইকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন বর্তমান উপাচার্য। আমাদের তার অন্যায়ের বিরুদ্ধে সমাবেশ করার পর তিনি সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন- তিনি তাবলীগ করতেন। কিন্তু তিনি ছিলেন একটি নির্দিষ্ট সংগঠনের কর্মী, যার মাধ্যমে তিনি ভিসি হন। এছাড়া ছাত্রলীগ থেকে টাকা ফেরত না নিয়ে নিজের পকেট থেকে দিয়ে সমন্বয় করেছেন। এধরনের বিভিন্ন কারুকাজ ও অপকৌশলের মাধ্যমে নিজেকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন তিনি। আমি তার পদত্যাগ দাবি করছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি এবং ডেপুটি রেজিস্ট্রার শরীফুর রহমান বলেন, বর্তমান উপাচার্য একজন লেবাসধারী। এর প্রমাণ আমরা ৪ তারিখের মিটিংয়ের বক্তব্যেই পেয়েছি। ওই মিটিং থেকেই বুঝা যায় তিনি ছাত্র আন্দোলনের বিরোধী ছিলেন। গদি বাঁচিয়ে রাখতে তিনি ১৭ জুলাই ছাত্রদের পক্ষ থেকে করা ছাত্র রাজনীতি বন্ধের অনুরোধটি তিনি রাখেননি, পরে আবার তিনি ৯ আগস্ট দাবিটি মেনে নেন। এছাড়া ৪ তারিখের মিটিং-এ ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল আলম সাকিবের উপাচার্যের গায়ে আওয়ামী লীগের ট্যাগ লাগার দাবির প্রেক্ষিতে উনি তা স্বীকার করেন।

উল্লেখ্য, এর আগে ২৫ আগস্ট উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহ আলিমুজ্জামানের পদত্যাগের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এরপর উপাচার্যের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২৮ আগস্ট সমসাময়িক পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থী-শিক্ষকের মাঝে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে উক্ত মতবিনিময় সভায় উপাচার্যের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের জবাব দেন উপাচার্য।