ক্যাম্পাস

ঢাবিতে তোফাজ্জল হত্যার ঘটনায় দ্রুত বিচার দাবি ছাত্রদলের

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় অপরাধীদের দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। 

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল এ আহ্বান জানায়।

সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির, ঢাবি শাখা সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস, সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন,আনিসুর রহমান খন্দকার (অনিক)-সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য নেতাকর্মীরা।

কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, চোর সন্দেহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের অতিথিকক্ষে আটকে রেখে তোফাজ্জল নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে একদল শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে কয়েক ঘণ্টা ধরে একাধিকবার মারধরের কারণে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। নিহত ব্যক্তি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন বলে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেছে। অবিলম্বে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। অপরাধীরা পালিয়ে যাওয়ার আগেই গ্রেপ্তারের আহ্বান জানাচ্ছি।

অনুসন্ধান ও প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী এবং গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে ছাত্রদল সভাপতি বলেন, আমরা দেখেছি তোফাজ্জলকে সবচেয়ে বেশি মারধর করেছেন ছাত্রলীগের সদ্য পদত্যাগ করা উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জালাল আহমেদসহ একদল শিক্ষার্থী। নির্যাতন করা শিক্ষার্থীদের সবাই ফজলুল হক মুসলিম হলের শিক্ষার্থী।

হত্যার ঘটনাকে হল প্রশাসনের ব্যর্থতা বলে দাবি করে আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে কয়েক ঘণ্টা ধরে মারধর করে একজনকে হত্যার ঘটনাকে আমরা হল প্রশাসনের চরম ব্যর্থতা বলে মনে করছি। ছাত্রলীগের পদধারী কতিপয় সন্ত্রাসী বর্তমানে সাধারণ শিক্ষার্থী নামে হলগুলোতে অবস্থান নিয়েছে। তারা বিভিন্ন সময়ে মব তৈরি করে আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থী নামে সক্রিয় এই মবকে প্রশ্রয় না দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে অনুরোধ করছি।

তিনি আরও বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীমকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এ ধরনের বিচারহীনতার সংস্কৃতির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। আমাদের দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিস্টবিরোধী সংগ্রাম, ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মূল উদ্দেশ্যই ছিল এদেশ থেকে সব অন্যায়, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর করা। একজন ব্যক্তি অপরাধী হলেও তাকে কোনওভাবেই হত্যার সুযোগ নেই।

ছাত্রদলের অভিযোগ, গণতান্ত্রিক পরিবেশের অনুপস্থিতিতেই ক্যাম্পাসে মব কালচারের বিস্তৃতি ঘটছে। পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার্থীর বেশে ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মীদের হলে অবস্থান এবং নানা মোড়কে হল ও ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা অন্যতম ভূমিকা পালন করছে।