ক্যাম্পাস

পরীক্ষার হলে ছিলেন শহিদ সাজিদও

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ৪ আগস্ট মিরপুরে গুলিবিদ্ধ হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী ইকরামুল হক সাজিদ। গত ১৪ আগস্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

আজ সাজিদের মাস্টার্স প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। বন্ধু-সহপাঠী সবাই পরীক্ষার হলে ফিরলেও স্বশরীরে ফেরেনি সাজিদ। তার স্মরণে বিভাগের পরীক্ষার হলের একটি সিট ফাঁকা রাখেন সহপাঠীরা।

রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাস্টার্স প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে দেখা গেছে, ৩১৫ নম্বর কক্ষের একটি আসনে পরীক্ষা শুরু থেকে ফুল ও বাংলাদেশের পতাকা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। যেন সাজিদ সশরীরে উপস্থিত না থাকলেও ছিলেন ফুল হয়ে।

সাজিদের সহপাঠী রায়হান উর রাহমান সাবাহ বলেন, আজ আমাদের এমবিএ প্রথম সেমিস্টার পরীক্ষা শুরু হলো। পরীক্ষা শুরুর আগে আমরা একসঙ্গে প্রিপারেশন নিতাম। সাজিদ না থেকেও আমাদের মাঝেই আছে। এই বিশ্বাস নিয়ে আমরা সামনে এগিয়ে যেতে চাই।

সাজিদের আরেক বন্ধু রনি বলেন, গত ২৭ জুন ও ৩০ জুন সাজিদের জীবনের শেষ দুটো মিডটার্ম পরীক্ষা আমরা একই বেঞ্চে বসে দেই। আজ সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় আমাদের মাঝে সাজিদ একগুচ্ছ ফুল হয়ে ফিরলো।

হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শামসুন নাহার বলেন, সাজিদ আমার সরাসরি ছাত্র ছিল। ক্লাসেও খুব অ্যাকটিভ ছিল সে। নতুন বাংলাদেশ গঠনে সে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবে তা অনুমেয় ছিল। আজ সাজিদ বেঁচে থাকলে পরীক্ষা দিতে আসতো, তাই তাকে স্মরণ করেই এই উদ্যোগ নেওয়া। সাজিদকে আমাদের বিভাগ আজীবন মনে রাখবে।’

উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা চলাকালে গত ৪ আগস্ট মিরপুর এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা (২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের) বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ইকরামুল হক সাজিদ। মাথার পেছন থেকে বুলেটটি তার চোখের পেছনে আটকে যায়।

তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাকে সিএমএইচ হাসপাতালে নেওয়া হয়। গত ১৪ আগস্ট ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পরে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জানাযা শেষে গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।