ক্যাম্পাস

চবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি সম্পাদকের জুনিয়র

২০২৪ এর বিপ্লবকে ধারণ করে ২৪ দফা দাবি নিয়ে এবার প্রকাশ্যে এসেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব দাবি জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ও চবি সূত্রে জানা গেছে, চবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি নাহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইব্রাহিম। সভাপতি ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের এবং সাধারণ সম্পাদক মার্কেটিং বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এ দুই শীর্ষ নেতার মধ্যে সভাপতি সম্পাদকের চেয়ে এক বছরের জুনিয়র। 

চবি শাখা শিবিরের ২৪ দফা দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করা ও আন্তর্জাতিক রেটিং তালিকার উপরের দিকে নিয়ে আসার যথাযথ ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং পাশাপাশি অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান সমূহে শিক্ষার মান ও পরিবেশকে যুগোপযোগী করার ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে হবে; দ্রুত সকল বিভাগ ও ইন্সটিটিউটকে সেশনজটমুক্ত করার দৃশ্যমান ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে; অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক সব কার্যক্রম আধুনিকায়ন এবং যুগোপযোগী করতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে, প্রয়োজনে জাতীয় বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির সুপারিশ করতে হবে; সব বর্ষের শিক্ষার্থীকে গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করতে একাডেমিক মেইল প্রদান করতে হবে এবং গবেষণায় সহযোগী উন্নত ডাটাবেজগুলোতে শিক্ষকদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদেরও এক্সেসের ব্যবস্থা করতে হবে; আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে হল তল্লাশি করে আসন বরাদ্দের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে এবং বরাদ্দের ক্ষেত্রে মেধা, দূরত্ব, আর্থিক অবস্থার বিবেচনাপূর্বক ডোপ টেস্টের মাধ্যমে আসন বরাদ্দ দিতে হবে; ছাত্র-জনতার বিপ্লবে শহিদ হৃদয় তরুয়া ও শহিদ ফরহাদ হোসেনের পরিবারকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারী শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয়ভার বিশ্ববিদ্যালয়কে বহন করতে হবে এবং শহিদদের নামে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নামকরণ করতে হবে; গত ১৫ বছরে হওয়া সকল নিয়োগের বস্তুনিষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে অবৈধ স্থায়ী/অস্থায়ী নিয়োগসমূহ দ্রুত বাতিল করতে হবে।

দাবির মধ্যে আরও রয়েছে- আন্দোলনকারীদের উপর নির্যাতনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত শিক্ষার্থীদের স্থায়ী বহিষ্কার এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করতে হবে; শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে সকল ধরনের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, গবেষণাধর্মী ও ক্যারিয়ারভিত্তিক ক্লাব এবং সংগঠনগুলোর কাজের সুবিধাজনক স্থানে টিএসসি স্থাপন করতে হবে; শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ও সময় অপচয় রোধে রেললাইনের প্রয়োজনীয় সংস্কার করে শাটলে দ্রুতগতির ইঞ্জিন সংযুক্ত করতে হবে ও শিডিউল বৃদ্ধি করতে হবে; স্থায়ী নীতিমালা প্রণয়ন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে; সন্ত্রাস, দখলদারিত্ব, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি ও সকল ধরনের অপরাজনীতি রোধ করে দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে সুস্থ ধারার রাজনীতি চর্চার পরিবেশ নিশ্চিত করতে; ক্যাম্পাস এবং আশপাশের এলাকা মাদক ও অস্ত্রমুক্ত রাখতে সন্ত্রাস ও মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত দৃশ্যমান আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়া তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সেক্টরের সংস্কারসহ মানোন্নয়নের দাবি জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, এ সব দাবি বাস্তবায়নের মাধ্যমে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি ও বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণে প্রশাসনের আন্তরিক সদিচ্ছা ও সাহসী পদক্ষেপ জরুরি। তবেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আধুনিক, মানসম্মত, শিক্ষার্থীবান্ধব ও যুগোপযোগী হয়ে উঠবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

এ বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক জানান, চব্বিশের ছাত্র-জনতার বিপ্লব পরবর্তী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশে হল দখল না হওয়ার যে সংস্কৃতি চালু হয়েছে। আগামীতে যে কোনো বিপ্লব বা ক্ষমতার পালাবদলে কোনো দল তা সহজে পরিবর্তন করতে পারবে না। আমরা চাই ছাত্র রাজনীতির সংস্কৃতি পরিবর্তন হোক। 

সভাপতি নাহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা ২০২৪ এর বিপ্লবকে ধারণ করে আজ ২৪ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে ২৪ দফা দাবি উত্থাপন করলাম। আশা করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অতি দ্রুত আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো পূরণ করবেন।