ক্যাম্পাস

সব স্তরে ইসলাম শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবিতে রাবিতে মানববন্ধন

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক সংশোধন কমিটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমদের প্রতিনিধিত্বকারী ইসলামিক স্কলারদের অন্তর্ভুক্তকরণ ও শিক্ষার সব স্তরে ইসলাম শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মানববন্ধন করা হয়েছে।

সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে এই কর্মসূচি পালন করে রাবির  বাংলাদেশ ইসলামিক স্টাডিজ সোসাইটি।

এ সময় ‘ধর্ম নিরপেক্ষ শিক্ষাব্যবস্থার নির্মূল চাই, ধর্মভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা চাই’, ‘৯৩% মুসলিম এর দেশে ইসলাম শিক্ষা বাধ্যতামূলক চাই, করতেই হবে’, ‘পাঠ্যপুস্তক সংশোধন কমিটিতে দুজন ইসলামিক স্কলার চাই’, ‘সকল পাবলিক, সরকারি বেসরকারি কলেজগুলোতে ইসলামিম স্টাডিজ বিভাগ চাই’, ‘নৈতিকতা সম্পন্ন শিক্ষাব্যবস্থা চাই’, ‘We Want Justice’সহ বিভিন্ন দাবি লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।

মানববন্ধনে চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাসুম বিল্লাহ বলেন, রাষ্ট্রের শিক্ষাকে আবার কবর দেওয়া হচ্ছে। তবুও আমরা কিছু বলতে পারছি না। আমরা দেখেছি, সমকামীতার বিপক্ষে কথা বলায় কিভাবে শিক্ষক সমাজকে অপমান করা হয়েছে। প্রথম শ্রেণি থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত দুর্নীতিতে ভরে গেছে। পাঠ্যপুস্তকে নৈতিক শিক্ষা বলতে কিছু নেই। শিক্ষিতরা আজ সম্মান পান না। আমাদের দাবি যদি মেনে নেওয়া না হয়, তাহলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবো।  আমরা শাহবাগী চেতনাকে কবর দিয়ে ইসলামী চেতনা প্রতিষ্ঠা করবো।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক আব্দুল আল মমুন বলেন, বিগত ১৬ বছর বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার যে পরিবর্তন করা হয়েছে, তাতে দেখা যায় ইসলামিক শিক্ষার কোনো কিছুই আর অবশিষ্ট রাখা হয়নি। আমি চাই বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় আবারও ইসলামের নৈতিক শিক্ষা চালু করা হোক। ইসলামি শিক্ষার দ্বারা অনুপ্রাণিত নতুন বাংলাদেশ গড়ে উঠুক।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি ড. মো. আশারাফুজ্জামান, আমরা দেখেছি স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে ইসলাম শিক্ষার তেমন উন্নতি হয়নি। বরং ইসলাম শিক্ষা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় আরও পিছিয়ে পড়েছে। এটি হয়েছে কতিপয় স্বৈরাচার শাসকের ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থার কারণে। আজ মানববন্ধনে উত্থাপিত ছয় দফা দাবিকে আমি সমর্থন করছি। এ দাবিগুলো যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় বাস্তবায়ন করা হয়।

তাদের দাবিগুলো হলো-

১. জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) মূল কমিটিতে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ‘ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি বিভাগ’ থেকে ইসলাম শিক্ষা সংশ্লিষ্ট পুস্তক প্রণয়নের জন্য চারজন এবং সব স্তরে প্রণীত পুস্তকের শরি’আ বিষয়াদি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ন্যূনতম দুজন গ্রহণযোগ্য, বিতর্কমুক্ত ও নির্ভরযোগ্য শিক্ষাবিদ অন্তর্ভুক্ত করা। বিতর্কিত ও ভ্রান্ত-চিন্তা লালনকারী, ইসলাম বিদ্বেষী এবং দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মতাদর্শের বহির্ভূত কাউকে এ কমিটিতে রাখা যাবে না।

২. কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক প্রণীত এমপিও নীতিমালা ২০১৮ (২৩ নভেম্বর ২০২০ সংশোধিত) প্রবিধান সংশোধন করে মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রভাষক (আরবি, ফিকহ, কুরআন, হাদিস ও লাইব্রেরিয়ান) এবং সহকারি মৌলভী (আরবি) ও সহকারি লাইব্রেরিয়ান পদে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের গ্রাজুয়েটদের আবেদন করার সুযোগ পুনর্বহাল করে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি।

৩. প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের সব স্তরে ইসলাম শিক্ষা আবশ্যিককরণ।

৪. সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি ও বেসরকারি কলেজে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ চালু নিশ্চিতকরণ।

৫. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ, আরবি সাহিত্য, ফিকহ, কুরআন, হাদিস ইত্যাদি বিভাগ নিয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বা শরি’আ অনুষদ চালু করা।

৬. ইসলামিক সংশ্লিষ্ট বিভাগ ব্যতীত অন্যান্য বিভাগে ইসলাম শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিষয়কে জিইডি’র অন্তর্ভুক্তকরণ।