ক্যাম্পাস

বিশ্ববিদ্যালয়ে গিভ অ্যান্ড টেক কালচার চালু হয়েছে: রাবি উপাচার্য

‘একটা ইন্টারেস্ট গ্রুপ আছে যারা সবসময় নিজেদের স্বার্থ হাসিলে কাজ করে। এর সব থেকে বেশি প্রভাব পড়েছে সাংবাদিকদের উপর। ফলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) একটা গিভ অ্যান্ড টেক কালচার চালু হয়েছে। ভালো ভালো কথা বললে, তাকে নানারকম সুবিধা দিতে হবে। যদি সুবিধা না পাওয়া যায়, সত্য হোক আর মিথ্যা হোক খারাপ কথাই বলবে। তবে নতুন বাংলাদেশে আমরা এটা হতে দেব না।’

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) ও গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে শিকারি সাংবাদিকতার উত্থান’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব। বেলা ১১টায় ডিন কমপ্লেক্সে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

তিনি বলেন, আমরা একটা নতুন সুযোগ পেয়েছি আগে যেমন ছিল তার থেকে দেশটাকে নতুন করে গড়ে তোলার। আমরা আগে যে কথাগুলো বলতে পারতাম না, এখন সেগুলো বলার সুযোগ হয়েছে। এগুলো বলার পাশাপাশি আমরা তর্ক, বিতর্ক, যুক্তি, অযুক্তি, কুযুক্তির চর্চা চালিয়ে যাচ্ছি।

উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশে বয়ান তৈরি করার একটা নির্দিষ্ট গোষ্ঠী আছে। যার বাইরে কেও বয়ান তৈরি করতে পারে না। আপনি যদি ইনকমপটেন্ট হন, আপনার উপর যা কিছু চাপিয়ে দেওয়া যাবে। তাই জানতে হবে, শিখতে হবে। আমাদের প্রতিটা শব্দ মেপে মেপে বলতে হয়। এ পরিস্থিতিটি কারা সৃষ্টি করেছে, কেনো করেছে- সেটা খুঁজে বের করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ১৬ বছর আমরা বলতে পারিনি, এখন তো আমরা স্বাধীন, এখন কেনো আমরা পারবো না? কি ধরনের পরিবর্তন দেশের দরকার তা জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের মধ্যেই আছে। মানুষ কি ধরনের পরিবর্তন চেয়েছিল, তা তখনই জানিয়েছে। কোনো বিষয়কে যেভাবে অতি সরলীকরণ করা হয়, সেটা আসলে করা অনুচিত। এজন্য সবাইকে শেখার পথে এগিয়ে আসতে হবে।

রাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোজাম্মেল হোসেন বকুলের সভাপতিত্বে ও পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফির সঞ্চালনায় সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন।

এতে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক মো. আখতার হোসেন মজুমদার, প্রক্টর অধ্যাপক মো. মাহবুবুর রহমান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক মশিহুর রহমান, অধ্যাপক তানভীর আহমদ, অধ্যাপক শাতিল সিরাজ, পিআইবির পরিচালক (প্রশিক্ষণ) পারভীন সুলতানা রাব্বী প্রমুখ। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী, ক্যাম্পাস ও শহরের বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিয়োজিত সাংবাদিকরাও সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।

সমপনী বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মোজাম্মেল হোসেন বকুল বলেন, সাংবাদিকদের কাজই শিকার করা। এটা ইতিবাচক বা নেতিবাচক হতে পারে। কাউকে টার্গেট করে তার ঘটনা সবার সামনে তুলে আনা, দুর্নীতি অপকর্ম প্রকাশ করা। এটা যখন নেতিবাচকভাবে উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য করা হয়, তখন বিষয়টা অন্যদিকে মোড় নেয়। অনেক ঘটনা ঘটার আগে সাংবাদিকদের ইনফর্ম করা হয়। তারা আসলে তারপর ঘটনা ঘটে। একটা গোষ্ঠী আছে যারা নিজেরাই নিউজ হতে চায়। কাঙাল হরিনাথের সময়কারের সাংবাদিকতা এখন খুঁজে পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। কারণ সব মিডিয়া কোনো একটা করপোরেট গ্রুপের অধীনে। যতদিন এর মালিকানা এমন থাকবে, ততদিন প্রিডেটরি জার্নালিজম চলতে থাকবে।