ক্যাম্পাস

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘কুলীন কুলসর্বস্ব’ মঞ্চস্থ

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম  বিশ্ববিদ্যালয়ে মঞ্চস্থ হলো ১৭০ বছর আগে রচিত নাটক কুলীন কুলসর্বস্ব। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া হায়দার থিয়েটার ল্যাবে সন্ধ্যায় নাটকটির মঞ্চায়িত হয়। 

বাংলাদেশ শিল্পকলা অ্যাকাডেমির আয়োজনে চিরায়ত বাংলা নাটক মঞ্চায়নের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগের ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশনায় বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে দেশজ নাট্যের আঙ্গিকে নতুনভাবে মঞ্চায়িত হলো এ নাটক। এ নাটকের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় ছিলেন থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মুশফিকুর রহমান (হীরক মুশফিক)। 

জানা গেছে, রামনারায়ণ তর্করত্ন ১৮৫৪ সালে নাটকটি রচনা করেন। নাটকটি মূলত উনবিংশ শতাব্দীর বাংলা সমাজের কুলীন প্রথা ও তার অপব্যবহারের ওপর ভিত্তি করে রচিত। কুলীন ব্রাহ্মণদের বহুবিবাহ প্রথা, পণের জন্য মেয়েদের পরিবারের প্রতি শোষণ এবং সে সমাজের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব তুলে ধরা হয়েছে এখানে।

নাটকটির সহকারী নির্দেশক এসএ শিশির জানান, বাংলাদেশে এ নাটক শেষ কবে ও কোথায় হয়েছে, তা জানা নেই। তবে দেড়শো বছরেরও বেশি পুরোনো এমন একটি নাটক নতুন রূপে উপস্থাপনের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারাটা নিঃসন্দেহে আনন্দের।

বলা হয়ে থাকে, বাংলা ভাষায় প্রথম সামাজিক মৌলিক নাটক ‘কুলীন কুলসর্বস্ব’। তৎকালীন সময়ের প্রেক্ষিতে নানান হাস্য-রস, কটাক্ষ তথা প্রহসনের মধ্য দিয়ে নাটকের গতি এগিয়ে চলে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সঙ্গীত-নৃত্য-গীত-ছন্দ ইত্যাদির সম্মিলন ও দেশজ আঙ্গিকে এর উপস্থাপন যেন দর্শককে নাটকটিতে নিবিষ্ট করে রাখে। দীর্ঘদিন পরে এমন একটি নাটকের উপস্থাপনায় আনন্দ প্রকাশ করেছেন অনেকে।   এ নাটকে নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থীরা ছাড়াও ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিস, ইইই, সংগীত, নৃবিজ্ঞানের মতো বিভাগের  শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন। বিভিন্ন পরিকল্পনায় ছিলেন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ।

নির্দেশক হীরক মুশফিক বলেন, ‘বাংলাদেশ শিল্পকলা অ্যাকাডেমির আয়োজনে নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ আমার জন্যে আনন্দের। আমার শিক্ষার্থী ও  বিভাগের সহকর্মীদের আন্তরিক সহযোগিতা পেয়েছি, কৃতজ্ঞতা জানাই তাদেরকে। সংস্কৃত প্রভাবজাত কুলীন কুলসর্বস্ব নাটকটিকে সাধারণ দর্শকের কাছে সহজবোধ্য করে তুলে ধরতে চেয়েছি। তাদের ব্যপক সাড়া আমাকে উৎসাহিত করেছে।

এ নাটকটি তৎকালীন সমাজে বহুবিবাহ ও সমন্বয় কুলীন প্রথার বিরুদ্ধে একটি সোচ্চার প্রতিবাদ হিসেবেও গণ্য হয় বলে জানান হীরক মুশফিক।