কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. জসিম উদ্দিনকে নিয়ে রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশের পর অভিযুক্ত শিক্ষককে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এ ছুটি বলবৎ থাকবে।
তবে অভিযুক্ত শিক্ষকের দাবি, যথাযথ প্রক্রিয়া না মেনেই তাকে এ শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
গত মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মজিবুর রহমান মজুমদার স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে শিক্ষক জসিম উদ্দিনের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
চিঠি সূত্রে জানা যায়, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ষষ্ঠ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ এবং রাইজিংবিডিসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে মো. জসিম উদ্দিনকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাধ্যতামূলক ছুটি প্রদান করা হলো। এ সময়ের মধ্যে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কোনো কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। একইসঙ্গে বিভাগে উপস্থিত হওয়া থেকে বিরত থাকবেন। এ আদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে জারি করা হয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
আরও পড়ুন: ‘জামাইয়ের সাথে থাকতে থাকতে বালতি হয়ে গেছো’
এ চিঠির ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, আমি গতকাল রাতে মেইলে এ চিঠি পেয়েছি। এরপর আমাকে আর কিছু জানানো হয়নি। আমি কিছু জানি না।
তিনি বলেন, দেখেন এ ঘটনায় একটা তদন্ত কমিটি হতে পারতো। তদন্ত কমিটি থেকে শোকজ করতে পারতো। শোকজের জবাবে আমি আমার জায়গাটা বলতাম। এরপর একটা সিদ্ধান্তে আসা যেত। কিন্তু কোনো তদন্ত কমিটি না করে আমাকে শাস্তি দিয়ে দিলো। এটা তো কোনো প্রক্রিয়া হতে পারে না।
প্রসঙ্গত, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ৪৩ এর ৬ ধারায় বলা আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বেতনভোগী শিক্ষক বা কর্মকর্তাকে তার কর্তব্যে অবহেলা, অসদাচরণ, নৈতিক স্খলন বা অদক্ষতার কারণে সংবিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে চাকরি থেকে অপসারণ বা পদচ্যুত করা অথবা অন্য কোনো প্রকার শাস্তি প্রদান করা যাবে। তবে শর্ত থাকে যে, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পর্কে কোনো তদন্ত কমিটির মাধ্যমে তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত এবং তাকে ব্যক্তিগতভাবে বা কোনো প্রতিনিধির মাধ্যমে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে চাকরি থেতে অপসারণ বা পদচ্যুত করা যাবে না৷
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মজিবুর রহমান মজুমদার বলেন, ন্যায়বিচারের জন্য আমরা তাকে ফোর্স লিভে পাঠিয়েছি। অন্যান্য ঘটনার মত এ ঘটনাতেও আমরা যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই সব কার্যক্রম করছি।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, তদন্তের স্বার্থেই ওনাকে বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়া হয়েছে। আমরা তদন্তের জন্য ইতোমধ্যে কমিটি করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এছাড়া তাকে শোকজের বিষয়টির কাজও চলছে।