ক্যাম্পাস

জাবি স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন

১৪ দফা দাবিতে সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা। এর আগে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক সমস্যা সমাধানে করা দাবি বাস্তবায়ন না করায় তারা এ ঘোষণা দেয়।

সোমবার (৭ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর ১৪ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি জমা দেয়।

স্মারকলিপির মাধ্যমে তারা উপাচার্যকে জানায়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার সংশ্লিষ্ট নানা সমস্যায় জর্জরিত। দাবিগুলো প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষকে মৌখিকভাবে বারবার অবগত করা হয়েছে। সর্বোচ্চ অভিভাবক হিসেবে উপাচার্য প্রতিষ্ঠানটির দীর্ঘদিনের সমস্যা ও দাবিগুলো যথার্থতা অনুধাবন করে তা নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তারা আশা প্রকাশ করে।

শিক্ষার্থীদের দাবীগুলো হলো-

১. স্কুল শাখায় জায়গা সংকট সমাধানের জন্য একটি নতুন স্কুল ভবন নির্মাণ প্রয়োজন। এছাড়াও চারতলা কলেজ ভবনের পশ্চিম অংশের সিঁড়ি পুনঃনির্মাণ আবশ্যক।

২. স্কুল ও কলেজ উভয় ভবনে ওয়াশরুম ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে এবং পরিচ্ছন্নতা কর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। মেয়েদের টয়লেট ও ওয়াশরুমের জন্য মহিলা পরিচ্ছন্নকর্মী নিয়োগ দিতে হবে।

৩. আগামী ২-১ মাসের মধ্যে শূন্য পদের বিপরীতে স্থায়ীভাবে শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। খণ্ডকালীন শিক্ষকদের স্থায়ীভাবে নিয়োগ দিয়ে খণ্ডকালীন পদে যোগদানের তারিখ থেকে সার্ভিস টাইম ধরে তাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ নিরসন করতে হবে।

৪. প্রতিষ্ঠানের মূল প্রবেশ ফটকের অসমাপ্ত কাজ নকশা অনুযায়ী সমাপ্ত করতে হবে। এছাড়া স্কুল অংশের ভেঙ্গে যাওয়া দ্বিতীয় ফটক মেরামত বা পুণঃনির্মাণ করতে হবে।

৫. স্কুল ও কলেজ লাইব্রেরিতে দ্রুত লাইব্রেরিয়ান বা প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দিয়ে এর কার্যপরিধি বৃদ্ধির মাধ্যমে ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।

৬. স্কুল ও কলেজ উভয় অংশে আলাদা আলদা কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করে ছাত্র-ছাত্রী অনুপাতে কম্পিউটার সংখ্যা ও মাল্টিমিডিয়ার স্মার্ট বোর্ড স্থাপন করতে হবে। 

৭. খাবারের দোকনকে আধুনিক স্বাস্থ্যসম্মত উপযুক্ত পরিসর বিশিষ্ট ক্যান্টিনে রূপ দিতে হবে।

৮. স্কুল- কলেজে অভিভাবকদের বসার জন্য দ্রুততম সময়ে উপযুক্ত স্থানে একটি অভিভাবক শেড স্থাপন করতে হবে।

৯. সাইকেল রাখার জন্য প্রতিষ্ঠানে একটি সাইকেল স্ট্যান্ড ও শেড নির্মাণ করতে হবে।

১০. সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও খেলাধুলার কার্যক্রমে উপযুক্ত বাজেট দিতে হবে।

১১. স্কুল ও কলেজের উভয় ভবনের প্রতিটি তলায় সুপেয় পানির ব্যবস্থা করতে হবে। 

১২. ক্লাস চলাকালে স্কুল ও কলেজের প্রতিটি ভবনের প্রবেশ ও বহিঃগমনের গেইট তদারকির জন্য গার্ডের সংখ্যা বাড়াতে হবে। 

১৩. বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ হিসেবে এ স্কুল ও কলেজ পরিচালনার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।

১৪. দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

জাবি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল জলিল ভূঞা বলেন, আমরা শীঘ্রই শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের চেষ্টা করবো। চাইলেই একসঙ্গে সব দাবি পূরণ করা সম্ভব না। তবে যেগুলো বেশি জরুরি, সেগুলো প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পূরণ করার চেষ্টা করবো৷

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এম মাহফুজুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপি দেওয়ার পর কিছুদিন অপেক্ষা করা প্রয়োজন ছিল। এত দ্রুত চাইলেই তো সব পূরণ করা সম্ভব নয়। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ আন্তরিক। আমরা চাই শিক্ষার্থীদের সব সমস্যা দূর হোক।