ক্যাম্পাস

রাবির গাছ থেকে পেরেক ও সাইনবোর্ড অপসারণ স্বেচ্ছাসেবীদের

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) প্রশাসনের উদ্যোগে ক্যাম্পাসের গাছগুলো থেকে পেরেক ও সাইনবোর্ড অপসারণ করেছেন বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা। শনিবার (১৯ অক্টোবর) বেলা ১১টায় রাবির ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তরের তত্ত্বাবধানে এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা।

এর আগে, শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ড. আমিরুল ইসলাম কনক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে এ কর্মসূচিতে আহ্বান করেন। তিনি ফেসবুকে লেখেন, ‘গাছের টিম্বার ভ্যালু নষ্টকারী পেরেক ও বোর্ড তুলতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে আগামীকাল (শনিবার) বেলা ১১টায় প্রশাসনের সামনে উপস্থিতির আহ্বান।’

এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা স্বতঃস্ফুর্তভাবে এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাবির আই ট্রিপল-ই আরউএসবি, স্টুডেন্ট কমিউনিটি পুলিসিং ফোরাম, সাইন্স ক্লাব, গ্রিন ভয়েস, রোভার স্কাউট, ইংলিশ স্পিকিং ক্লাব, এসিসিই গ্রুপসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো মই বেয়ে গাছে উঠে পেরেক ও সাইনবোর্ড অপসারণ করছেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে শুরু করে প্যারিস রোডের গাছগুলো থেকে পেরেক ও সাইনবোর্ড তুলতে সক্ষম হন।

রাবি স্পিকিং ক্লাবের সদস্য আতিক হাসান বলেন, ছাত্র উপদেষ্টা স্যারের ডাকে আমরা এখানে এসেছি। বিভিন্ন ব্যানার সাইনবোর্ড লাগাতে গিয়ে এরা গাছের সৌন্দর্য নষ্ট করেছে। আমরা আশা করছি, সমস্ত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন একসঙ্গে কাজ করে ক্যাম্পাসের গাছগুলোতে প্রাণ ফিরিয়ে আনতে পারব এবং ক্যাম্পাস আরও সুন্দর করে তুলতে পারবো।

রাবি গ্রিন ভয়েসের সভাপতি আশিকুর রহমান অন্তর বলেন, আমরা এর আগেও গাছ থেকে এগুলো অপসারণের চেষ্টা করেছি। কিন্তু প্রশাসনের তেমন সাহায্য পায়নি। আমরা একাধিকবার তৎকালিন উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলাম। তখন তারা বলেছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের ব্যানার আছে, এগুলো তোলা সম্ভব হবে না।

তিনি বলেন, বর্তমানে দেশ যেহেতু সংস্কারের পথে, সেই সংস্কারের ধারাবাহিকতায় বর্তমান প্রশাসন এ উদ্যোগ নিয়েছেন। ছাত্র উপদেষ্টার ডাকে ক্যাম্পাসের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো মিলে এ কাজগুলো করছি। আমরা চেষ্টা করছি ক্যাম্পাসের সমস্ত গাছগুলো থেকে এগুলো অপসারণ করার।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র উপদেষ্টা আমিরুল ইসলাম কনক বলেন, উপাচার্য সালেহ হাসান নকীব স্যারের পরামর্শে আমি উদ্দ্যোগ গ্রহণ করেছি। শিক্ষার্থীরা অনেকদিন ধরে দাবি করে আসছিল, ক্যাম্পাসের গাছগুলোতে বিভিন্ন রকম ব্যানার, সাইনবোর্ড, পোস্টার পেরেক দিয়ে লাগানো আছে। যুগ যুগ ধরে এটা হয়ে আসছে। সেগুলো অপসরণের জন্য তারা বলেছিল। আমরা যা ধারণা করেছিলাম, তার থেকে অনেক বেশি পেরেক দেখতে পেয়েছি। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো গ্রুপ গ্রুপ হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে কাজ করছে। একটি গাছ থেকে আমরা শতাধিক পেরেকও উদ্ধার করেছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা প্রধান ফটকের গাছগুলো দিয়ে শুরু করেছিলাম। কিন্তু গাছে পেরেকের পরিমাণ অনেক বেশি থাকায় প্যারিস রোড সম্পন্ন করতে পারিনি। আগামী শনিবারও (২৬ অক্টোবর) আমরা এ কর্মসূচি পরিচালনা করবো। গাছের উপর এমন অমানবিক আচরণ আমরা আর দেখতে চাই না। ভবিষ্যতে যাতে কেউ এমন কাজ না করে, সেজন্য আমরা সতর্কতামূলক নির্দেশনা জারি করব।