ক্যাম্পাস

বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে নবীন শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা

উচ্চমানের পার্থিব শিক্ষার সঙ্গে ব্রাহ্ম ধমের্র মূল মতবাদ সম্পর্কে সাধারণ ছাত্রদের জানানোর জন্য আরমানিটোলায় ব্রাহ্মসমাজের নিজস্ব প্রাঙ্গণে চালু করা হয় জগা বাবুর পাঠশালা নামে অবৈতনিক স্কুল। এ ব্রাহ্ম স্কুলের পরিবর্তিত রূপই আজকের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০৫ সালে মহান জাতীয় সংসদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫ পাসের মাধ্যমে এটি একটি পরিপূর্ণ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। পূর্বতন জগন্নাথ কলেজের শিক্ষার্থীরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে গণ্য হয়। ২০০১-০২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা প্রথম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা সনদ লাভ করে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০০৫-২০০৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়।

অল্প সময়ের ব্যবধানেই জবি পৌঁছে গেছে সুযোগ্য স্থানে। প্রতিযোহিতামূলক সব পরীক্ষায়  জাত চিনিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। তবে রয়েছে অবকাঠামোগত ও আবাসিক সংকট। নবনির্মিত ছাত্রী হল সে সংকট অনেকাংশে দূর করলেও স্বাভাবিকভাবেই থেকে যাবে ছাত্রদের আবাসন সমস্যা। রোববার (২০ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে নবীনরাও ক্যাম্পাসে ঢুকবে। কয়েকজন নবীন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয় রাইজিংবিডির। জানান তাদের ইচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন পূরণের সারথী হোক জবি

জ্ঞান অর্জনের বিস্তৃত জায়গা হলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাতিষ্ঠানিক একটি কাঠামোবদ্ধ পদ্বতিতে শিক্ষাদান করানো হলেও এ শিক্ষা নির্দিষ্ট কোনো সিলেবাস বা কারিকুলামের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। জ্ঞান বিতরণের দিক থেকে আর পাঁচটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যতিক্রম নয় আমাদের প্রাণের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০৫ সাল থেকে সহস্র শিক্ষার্থীকে পরিপূর্ণভাবে আদর্শ শিক্ষার্থী রূপে গড়ে তোলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষকরা এখন পর্যন্ত আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় যেন এভাবেই জ্ঞান বিতরণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন পূরণের সারথী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সহশিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমেও যেন শিক্ষার্থীদের মানসিক উৎকর্ষতা বিকাশে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। এবারের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে প্রশাসনের নিকট এমনটাই প্রত্যাশা রইলো। (লেখক: সাকিব ভুইঁয়ান, শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ)

বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে শিক্ষার্থীরা নানা প্রত্যাশা নিয়ে মুখিয়ে থাকেন

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দিবস হচ্ছে এমন একটি দিন, যেদিন শিক্ষার্থীদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন সুরে বরণ করার সুযোগ থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সবাই এক হয়ে দিনটি উদযাপন করেন। এ দিনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নানা রকম ভাবনা বা প্রত্যাশা নিয়ে মুখিয়ে থাকেন। যেমন- বর্ণিল শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, সংস্কৃতি অনুষ্ঠান, রঙ খেলা, খেলাধুলার আয়োজন ইত্যাদি। শিক্ষার্থীদের বাহারি রকম সাঁজ আর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাঁজ, দুইয়ে মিলে এক অন্যরকম পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সংস্কৃতি উদযাপনের সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে মিষ্টি বিতরণের মাধ্যমেও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে এক অন্য রকম মনোরম দিন সৃষ্টি হয়। (লেখক: মাহমুদুল হাসান নয়ন, শিক্ষার্থী, গণিত বিভাগ)

এখন আমি গর্বিত জবিয়ান

প্রত্যেকটা শিক্ষার্থীর জীবনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন থাকে। সে স্বপ্ন আমারও ছিল। সেই স্বপ্ন বুকে আগলে রেখে দীর্ঘ চার-পাঁচটা মাস পরিশ্রম করে অবশেষে আল্লাহর অশেষ রহমতে স্বপ্নটা পূরণ হয়েছে, সুযোগ হয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। দিন শেষে আমিও আমার নামের শেষে যুক্ত করতে পারছি, গর্বিত জবিয়ান। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের পরিবারটি আমার নিজের পরিবারের মতোই মনে হয়। এখানে শিক্ষকরা বাবা-মায়ের মতো, আর সিনিয়ররা ভাই-বোনদের মতো ভালোবাসা দিয়ে আমাদের আগলে রাখবে, সেই প্রত্যাশা সব সময়। গৌরব ও সাফল্যের ২০ বছরে পদার্পণ করতে যাচ্ছে আমার ক্যাম্পাস। শুভ কামনা রইলো। (লেখক: হৃদয় হাসান মুন্না, শিক্ষার্থী, সমাজকর্ম বিভাগ)

জকসু প্রতিষ্ঠা করা হোক

জুলাই বিপ্লব আমাদের মনে জাগিয়েছে আশা, তৈরি করেছে ভরসা। আমরা স্বপ্ন দেখছি বৈষম্যবিহীন এক বাংলাদেশের, এক নতুন ক্যাম্পাসের। ২০ বছর পদার্পণ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি আমাদের সুনির্দিষ্ট কিছু চাওয়া আছে। আমরা চাই ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি বন্ধ করে লেখাপড়ার সঠিক পরিবেশ নিশ্চিত করা হোক, সেই সঙ্গে ক্লাস ও পরীক্ষাগুলো যেন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হয় তা লক্ষ্য রাখা এবং সেশনজট থাকলে তা নিরসন করা। বিশ্ববিদ্যালয়ের দখলকৃত হল এবং জায়গাগুলো দ্রুত পুনরুদ্ধার করা জরুরি এবং নতুন ক্যাম্পাসের কাজ অতিদ্রুত শুরু করা উচিৎ। সম্প্রতি কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। তাই ক্যাম্পাস কিংবা বাসে যেন কেউ সিনিয়র বা ব্যাচমেট দ্বারা হেনস্তার শিকার না হয়, সেটা লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন। আর কর্তৃপক্ষ যদি ভালো মনে করলে জকসু প্রতিষ্ঠা করা হোক। তাহলে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিদাওয়া গুলো পেশ করতে পারবে।

অবশেষে, প্রাণের বিশ্ববিদ্যালয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় তোমার নাম কতটুকু উজ্জ্বল করতে পারব জানি না। তবে কথা দিচ্ছি, তোমার সম্মান ক্ষুণ্ন হয় এমন কোনো কাজ আমরা করব না। (লেখক: মো. ইশতিয়াক হোসেন রাতুল, শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ)