ক্যাম্পাস

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাওয়াত প্রত্যাখ্যান রাবি সমন্বয়কের

৪০তম বিসিএসে নিয়োগপ্রাপ্ত ৬২ জন পুলিশ ক্যাডার (এএসপি) প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ায় আজ রোববার (২০ অক্টোবর) যোগদান করার কথা ছিল। এ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অন্যতম সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার।

পুলিশ বাহিনীর সংস্কার না হওয়া, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ক্যাডার বানানোর অভিযোগসহ হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত কোনো সরকারি দাওয়াতে অংশগ্রহণ করবেন না বলে ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন এ সমন্বয়ক।

শনিবার (১৯ অক্টোবর) তিনি ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন, ‘দাওয়াতটা স্বজ্ঞানে প্রত্যাখ্যান করছি। কারণ (এক) এই ৬২ জন এএসপি হাসিনার আমলে নির্বাচিত হইছে। আর কত চুলচেরা বিশ্লেষণ করে বিসিএস (পুলিশ)-এ নিয়োগ হতো, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ব্যক্তি আমার জায়গা থেকে তাই উক্ত প্রোগ্রামে অংশ নেওয়ার পক্ষপাতী নই। তাদের ব্যাপারে তদন্ত হয়েছে কিনা! (দুই) পুলিশ বাহিনী এখনো কোনো সংস্কার হয়নি। অপরাধীরা এখনো ধরা পড়েনি। তাই আমি শহীদের রক্তের সাথে বেইমানী করে আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের বৈধতা দিতে পারি না।

তিনি আরও লেখেন, ‘দাওয়ার কার্ডটা নিয়ে আপনাদের কাছে দেখানোর উদ্দেশ্য ছিলো মামলার নাম ঠিকানায় দাওয়াত পাঠাইছে এটা দেখানো। আমি নিতান্তই একজন নগন্য মানুষ। কিন্তু আমার এথিক্স স্পষ্ট , আমার শহীদ ভাই আলী রায়হান, সাকিব আঞ্জুমসহ সকলের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমি সরকারি কোনো দাওয়াত গ্রহণ করবো না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি কোনোরকম তদন্ত ছাড়াই আওয়ামী লীগের দোসরদের এএসপি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমাদের ভাইদের মৃত্যুর মিছিল এখনো চলছেই। এমতাবস্থায় এ দোষরদের নিয়োগ এবং প্রশিক্ষণ দেওয়া মানে শহিদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানী করা। তাই আমি একজন আমন্ত্রিত অতিথি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক হিসেবে এ অনুষ্ঠান প্রত্যাখ্যান করলাম।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী শাসনামলে প্রশাসনে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতিসহ নানা অনিয়ম, অবৈধভাবে নিয়োগের সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার করতে হবে। পাশাপাশি আন্দোলনে প্রশাসনে যুক্ত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।’

উল্লেখ্য, ৪০তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে উত্তীর্ণ ৬২ জন ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর সারদা পুলিশ একাডেমিতে যোগদান করেন। অভিযোগ ওঠে, হাসিনা সরকার তিনটি ক্যাটাগরিতে ৪০তম বিসিএস থেকে প্রার্থী নির্বাচন করে। সে সময় লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও অনেকেই বাদ পড়েন শুধু এসবি ও এনএসআই এর প্রতিবেদনের কারণে। আওয়ামী লীগ না করলে কাউকেই নিয়োগ দেওয়া হয়নি এবং ফলাফল যত ভালোই হোক পরিবারের কেউ বিএনপি অথবা জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলে তাকে বাদ দেওয়া হয়।

এ ৬২ জন ছাত্রলীগের নেতার পুলিশে নিয়োগ নিয়ে সম্প্রতি সমালোচনা শুরু হয়। বিতর্কের মধ্যে শেষ মুহূর্তে এসে রাজশাহীতে বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাকাডেমিতে রোববার (২০ অক্টোবর) অনুষ্ঠিতব্য সমাপনী কুচকাওয়াজ প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় বাতিল করা হয়।