দেশের উচ্চ শিক্ষা সংস্কারে শিক্ষার্থীদের মতামতকে প্রাধান্য দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্যানেল আলোচনায় বক্তারা।
শিক্ষার্থীদের নানান ইস্যু নিয়ে মঙ্গলবার ঢাকা ইন্টারন্যাশন্যাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ) তে অনুষ্ঠিত ‘আমিও জিততে চাই’ ক্যাম্পাস এক্টিভেশন অনুষ্ঠানে বক্তারা এমন মতামত ব্যক্ত করেন।
ইউএসএআইডির অর্থায়নে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল ও ডিআইইউ এর যৌথ উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষা সংস্কারে তারুণ্যের প্রত্যাশা’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠান হয়।
‘বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষা সংস্কারে তারুণ্যের প্রত্যাশা’ শীর্ষক প্যালেন আলোচনা পরিচালনা করেন ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের ডেপুটি ডিরেক্টর অনিন্দ্য রহমান। ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের এসপিএল প্রকল্পের আওতায় ‘আমিও জিততে চাই’ ক্যাম্পেইন এর মাধ্যমে নাগরিক প্রত্যাশা তুলে ধরতে সারাদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও জেলায় নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। amiojittechai.com ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও গ্রহণ করা হচ্ছে নাগরিকদের দাবি ও মতামত।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই ক্যাম্পেইন সম্পর্কে জানান ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের ডেপুটি চিফ অব পার্টি (প্রোগ্রামস) আমিনুল এহসান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডেমোক্র্যাসি ইন্টারন্যাশনালের চিফ অফ পার্টি ডানা এল. ওল্ডস; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রাশেদা রওনক খান, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্ট্রি বোর্ডের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী প্রমুখ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রাশেদা রওনক খান বলেন, অন্যান্য দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার থেকে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি কারণ আমরা আমাদের অর্জনগুলো ওয়েবসাইটে তুলে ধরতে পারছি না এটা আমাদের ব্যর্থতার জায়গা। পাশাপাশি আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান নিয়ে নানান প্রশ্ন রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে বাকস্বাধীনতা অভাব থাকায় আমরা উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে বিশ্বের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিছিয়ে আছি।
তিনি আরও বলেন, তরুণদের হাত ধরে দেশের মধ্যে একটি পরিবর্তন এসেছে, আশা করি উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রেও তরুণদের হাত ধরে পরিবর্তন সম্ভব হবে।
যমুনা টিভির বিশেষ প্রতিনিধি মাহফুজুর রহমান মিশু বলেন, আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা শুধুমাত্র চাকরির মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। আমরা একটা ভালো চাকরির লক্ষ্য নিয়ে পড়াশোনা করি। সমাজে ভালো নাম হবে, এই আশা নিয়ে আমরা উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করি। কিন্তু, বাস্তবে আমরা সেসব উচ্চ শিক্ষা নিয়ে বেশিদুর এগোতে পারি না। আমরা একটা জায়গায় সীমাবদ্ধ হয়ে গেছি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমন্বয়ক নাজিফা জান্নাত বলেন, একটি সফল অভ্যুথানের মাধ্যমে পাওয়া দেশ যে কারণে অভ্যুথান করা হয়েছিল সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছে ছাত্রসমাজ।
দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন জানিয়ে এই সমন্বয়ক বলেন, উচ্চ শিক্ষার মানকে ক্ষুণ্ন করে যত্রতত্র বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। শিক্ষা আমাদের দেশে বাণিজ্য হয়ে গেছে। আমাদের এর মধ্যে থেকে বের হয়ে সার্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে।
পাশাপাশি তিনি বলেন, বিদেশে উচ্চ শিক্ষার জন্য যেতে হলে আমাদের অনেক ভোগান্তির স্বীকার হতে হয়। বিদেশে যেতে হলে অনেক আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হয়। আমাদের দেশে বর্তমান যে শিক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে যেখানে বিদেশে পড়তে যাওয়ার যে লম্বা প্রসেস আছে, সেটিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে উন্নত ও ডিজিটাল করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্ট্রি বোর্ডের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে, যেভাবে সম্প্রতি সময়ে তারা অনেক বড় ত্যাগের বিনিময়ে রাজনৈতিক ভাবে বিদ্ধস্ত একটি দেশকে নতুন স্বপ্ন দেখিয়েছে। তরুণরাই বিচক্ষণতার সাথে দেশের যেকোনো সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করতে পারবে।