ক্যাম্পাস

শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে চবি শিক্ষকের পদত্যাগ

শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়ে পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রন্টু দাশ।

বুধবার (২৩ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে বিভাগের নিজ কক্ষে পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর করেন তিনি। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান ও হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততা থাকার অভিযোগ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। 

জানা যায়, রন্টু দাশ চবি শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার ন্যূনতম শর্ত পূরণ না করেই দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তিনি শিক্ষক হন। স্নাতকে তার সিজিপিএ ২.৯৪ এবং এইসএসসিতে জিপিএ ২.৯২ ছিল। এছাড়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থানও নিয়েছিলেন তিনি। তার বিরুদ্ধে ২০১২ সালে শাখা ছাত্রশিবির নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাসউদ বিন হাবিব এবং প্রাণিবিদ্যা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মুজাহিদুল ইসলামের হত্যায় সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠে। 

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চবি সমন্বয়ক মোহাম্মদ আলী বলেন, রন্টু দাশ একজন ফ্যাসিবাদের দোসর। শিক্ষক হওয়ার মতো কোনো যোগ্যতাই তার নেই। ২.৯৪ সিজিপিএ নিয়ে কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারেন না। তিনি দলীয় প্রভাব খাটিয়ে শিক্ষক হয়েছেন।

জানতে চাইলে অধ্যাপক রন্টু দাশ বলেন, এ বিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই। 

ইতিহাস বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. শামীমা হায়দার বলেন, শিক্ষক রন্টু দাশের বিষয়টা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী যা হবার হবে। এভাবে পদত্যাগ করলেই তো আর পদত্যাগ হয় না, সবকিছুর তো একটা নিয়ম আছে। দীর্ঘদিনের ঘটনার প্রেক্ষিতে হয়তো শিক্ষার্থীদের মনে হচ্ছে এখনই পদত্যাগ করতে হবে। শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগের ঘটনাটি তো অনেক পুরানো। সেই প্রেক্ষিতে আমি মনে করি শিক্ষার্থীরা সময় নিয়ে প্রয়োজন মনে হলে মামলা করবেন।

চবি প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় অভিযুক্ত শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করেছে শিক্ষার্থীরা। তারা প্রথম আলোসহ আরেকটি পত্রিকার রিপোর্ট দেখিয়েছে। যেখানে দেখা গেছে, তিনি হত্যা মামলার এক নাম্বার আসামি এবং পুলিশ তাকে গ্রেফতারও করেছিল। ফলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা তার পদত্যাগ দাবি করে।

তিনি বলেন, আমি বিভাগে আসার পূর্বেই ওই শিক্ষক একটা পদত্যাগ পত্র লিখেছেন এবং সেখানে স্বাক্ষরও করেছেন। পদত্যাগ জোরপূর্বক বা কেউ চাওয়া মাত্রই হয় না। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম এবং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হবে। পরে আমার অনুরোধে  শিক্ষার্থীরা ইতিহাস বিভাগ ত্যাগ করে।

এদিকে বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে শিক্ষার্থীরা ২৪ এর গণহত্যাসহ ক্যাম্পাসের সব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের তদন্ত কমিটি গঠন করে চাকরিচ্যুত করার দাবি জানান। নিয়োগের নীতিমালা শিথিল করে অথবা নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে যাদেরকে অবৈধভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তদন্ত কমিটি গঠন করে তাদেরও নিয়োগ বাতিল করে চাকরিচ্যুত করতে হবে বলে দাবি করেন তারা।