ক্যাম্পাস

মাস্টারপ্ল্যানের দাবিতে আবারও মানববন্ধন জাবি শিক্ষার্থীদের

পরিবেশ ধ্বংস করে যত্রতত্র গাছ কেটে ভবন নির্মাণের প্রতিবাদ ও দ্রুত মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের দাবিতে আবারও আন্দোলন করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) বেলা ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনারের পাদদেশে এ দাবিতে মানববন্ধন করেন তারা।

মানববন্ধনে ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ইমনের সঞ্চালনায় বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আ র ক রাসেল বলেন, জাবি বাংলাদেশের অন্যতম একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু প্রাকৃতিক পরিবেশকে ধ্বংস  করে বহুদিন থেকে প্রশাসন যেখানে সেখানে ভবন নির্মাণ করছে। যার মধ্যে অন্যতম ছেলেদের নতুন তিনটি হল অন্যতম। গাছপালা ধ্বংস করে নতুন হলগুলো বস্তির মতো নির্মাণ করা হয়েছে। বস্তির মতো ভবন নির্মাণের কারণে শেখ রাসেল হল ও রফিক-জব্বার হলের মধ্যে সংঘর্ষ হয়, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য লজ্জার। এছাড়া জলাশয়, লেকগুলো ভরাট করে ভবন তৈরি করা হচ্ছে। ভবন নির্মাণ করতে হলে মাস্টারপ্ল্যানের মাধ্যমেই করতে হবে। 

নাটক ও নাট্যতত্ত্বের শিক্ষার্থী সোহাগী সামিয়া বলেন, সারাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলেোতে প্রাণ প্রকৃতি ধ্বংস করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন পাহাড় কেটে কিভাবে ভবন নির্মাণ করছে, জাবিতে গাছপালা ধ্বংস করে ইচ্ছে মতো ভবন নির্মাণ হচ্ছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) দেখেন সামান্য পানিতে জলাবদ্ধতা হচ্ছে, শব্দদূষণ হচ্ছে, বায়ু দূষণ হচ্ছে। এটা শিক্ষার্থীদের জন্য পড়ার পরিবেশ কখনো না। জাবিও আরেকটি ঢাবিতে পরিণত হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টিতে শহিদ মিনারে জলাবদ্ধতা হয়ে যায়।

তিনি বলেন, আমরা ভবন নির্মাণের বিপক্ষে না। আমরা চাই, পর্যাপ্ত গবেষণাগার থাকুক, ক্লাস রুম থাকুক। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রাণ-প্রকৃতি ধবংস করে ভবন তৈরি করছে, যার বিপক্ষে আমরা। গাছপালা না থাকা ও লেকগুলো পানি শূন্য হওয়ায় আমরা এখন আর অতিথি পাখি দেখি না। এজন্য আমাদের দাবি অনতিলম্বে মাস্টারপ্ল্যান করতে হবে।

পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের শিক্ষার্থী মুক্তারুল ইসলাম অর্ক বলেন, আগের প্রশাসনের মস্তিষ্ক থাকলে এভাবে প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করে ভবন নির্মাণ করতো না। সাবেক উপাচার্য ফারজানা দুটো প্রশাসনিক ভবন থাকার পরও তৃতীয় প্রশাসনিক ভবনের কথা বলেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লেক জলাশয়গুলো ভরাট করছে। এর ফলে শীতকালে অতিথি পাখি আসার প্রবণতা ও ক্যাম্পাসের সবুজ সমারোহ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আমরা প্রশাসনকে বলতে চাই, আপনারা যদি মাস্টারপ্ল্যানের জন্য কাজ করেন, তাহলে শিক্ষার্থীরা সহযোগীতা করবে। আর যদি আগের মতো কাজ করার চেষ্টা করা হয়, তাহলে তার সমুচিত জবাব পাবেন।

উল্লেখ্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ-প্রকৃতি ইচ্ছামতো ধংস না করে একটি মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের মাধ্যমে উন্নয়ন কাজ করার দাবি বহুদিন ধরেই জানিয়ে আসছেন শিক্ষার্থীরা।