ক্যাম্পাস

জাবিতে প্রকাশ্যে ছাত্রশিবির: প্রতিবাদে মধ্যরাতে বিক্ষোভ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ ৩৫ বছর পর প্রকাশ্যে আসায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল সংগঠনের নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) মধ্যরাতে ছাত্রশিবির ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ সংগঠন উল্লেখ করে তারা এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর ধাপে ধাপে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়েও (ইবি) প্রকাশ্যে আসে সংগঠনটি।

জানা গেছে, ১৯৮৯ সালের ১৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত জাবি সিন্ডিকেটের ১৪২তম সভার এক সিদ্ধান্তে পর আত্মাগোপনে চলে যায় সংগঠনটি। এরপর থেকে তারা গোপনে তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড অব্যহত রেখেছিল। সর্বশেষ মঙ্গলবার প্রচার সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন সাকির পাঠানো এক বিবৃতির মাধ্যমে জাবি শাখা শিবির প্রকাশ্যে আসে। ওই বিবৃতিতে সভাপতি হারুনুর রশিদ রাফি ও সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান মুহিবের বক্তব্য উল্লেখ করা হয়েছে।

শিবিরের আত্মপ্রকাশের প্রতিবাদে রাত দেড়টার দিকে বের হওয়া বিক্ষোভ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহিদ মিনারের পাদদেশে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।

আরও পড়ুন: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও প্রকাশ্যে ইসলামী ছাত্রশিবির

বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নূর-এ তামিমের সঞ্চালনায়  করেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সোহাগী সামিয়া বলেন, ‘১৯৭১ সালে যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপক্ষে দাঁড়িয়েছিল, সে সব ব্যক্তি কারা ছিল—তার চেয়ে আমাদের কাছে বড় হিসাব হলো, কোন সংগঠন ছিল। আজ ২০২৪ সালে দাঁড়িয়ে আপনি সেই সংগঠনের আদর্শকে ধারণ করে এখানে রাজনীতি করতে আসছেন। যে সংগঠন বাংলাদেশকে কোনো দিন চায়নি, স্বাধীনতাকে চায়নি- সেই সংগঠন স্বাধীন বাংলাদেশে দাঁড়িয়ে রাজনীতি করার অধিকার রাখে না। সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা আছে। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে দাঁড়িয়ে কোনোভাবেই একটি ছাত্র সংগঠন ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করতে পারবে না।’

জাবি ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি অমর্ত্য রায় বলেন, ‘ছাত্রশিবিরকে কোনোদিন দেখিনি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে আন্দোলন করতে, কোনো দিন ওরা শ্রমিক হত্যা নিয়ে আন্দোলন করেনি। তারা সব সময় শাহবাগ আর শাপলা চত্বর ভাগাভাগি করতে ব্যস্ত। এ রকম বিভাজনের রাজনীতি করে আওয়ামী লীগ। যে রাজনৈতিক দলের হাতে রক্তের দাগ রয়েছে, সেই সংগঠনকে রাজনীতি করতে হলে বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আসতে হবে। সেটা সামাজিক বা আইনি বিচার হতে পারে। এ জন্য ১৪ হাজার শিক্ষার্থীর কাছে ক্ষমা চেয়ে তাদের ক্যাম্পাসে আসতে হবে।’

এদিকে, এ বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়ে বুধবার (৩০ অক্টোবর) ফেইসবুক পেইজে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জাবি শাখা  ছাত্রশিবির।

সেখানে বলা হয়েছে, ‘ছাত্রশিবিরের গণতান্ত্রিক রাজনীতির বিরোধিতায় অনুষ্ঠিত মিছিলকে আমরা স্বাগত জানাই। আমরা সকল রাজনৈতিক সংগঠনের সহাবস্থানে বিশ্বাসী। সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করতে সকল ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে আগ্রহী বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।’