ক্যাম্পাস

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আজ

আজ ২ নভেম্বর (শনিবার), সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি) দিবস। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব কোণে অবস্থিত হাওর, সমতল ভূমি ও টিলাবেষ্টিত সিলেট বিভাগের প্রাণীসম্পদে ভুমিকা রাখতে ১৯৯৫ সালে সিলেট সরকারি ভেটেরিনারি কলেজ হিসেবে যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে ২০০৬ সালের ২ নভেম্বর এটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপ পায়। সে হিসেবে আজ বিশ্ববিদ্যালয়টির ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।

প্রতিষ্ঠার শুরুতে তিনটি অনুষদ নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও পর্যায়ক্রমে চালু হয় সাতটি অনুষদ। এর মধ্যে রয়েছে- ভেটেরিনারি অ্যানিম্যাল অ্যান্ড বায়োমেডিকেল সায়েন্সেস, কৃষি, মাৎসবিজ্ঞান, কৃষি প্রযুক্তি ও প্রকৌশল, কৃষি অর্থনীতি ও ব্যাবসায় শিক্ষা, জীবপ্রযুক্তি ও জীন প্রকৌশল এবং পোস্ট গ্রাজুয়েশন।

এ সব অনুষদের মাধ্যমে কৃষি বিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রসরমান বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গতি রক্ষা ও সমতা অর্জন এবং জাতীয় পর্যায়ে উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি, আধুনিক জ্ঞানচর্চা ও কৃষি বিজ্ঞানের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত অন্যান্য বিষয়ে শিক্ষা দান ও গবেষণাকর্ম পরিচালনা করা হয়। সাতটি অনুষদে সর্বমোট ৪৭টি বিভাগ রয়েছে। এছাড়া মাঠ গবেষণা কেন্দ্রসহ উন্নত ল্যাবরেটরি ছাড়াও রয়েছে একটি ভেটেরনারি টিচিং হাসপাতাল।

সিলেট বিভাগীয় শহর থেকে প্রায় ৭ কিমি উত্তর-পূর্বে পাহাড় বেষ্টিত প্রায় ৫০ একর এলাকা নিয়ে গড়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির মূল ক্যাম্পাস। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদীয় ভবন, প্রশাসনিক ভবন ও আবাসিক ভবন ছাড়াও নির্মাণাধীন রয়েছে অডিটোরিয়াম ও দৃষ্টিনন্দন প্রধান ফটক। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক ড. মো. আলিমুল ইসলাম।

এখানে শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে সাতটি আবাসিক হল। এর মধ্যে ছাত্রদের জন্য হুমায়ূন রশীদ চৌধুরী হল, শাহ এএমএস কিবরিয়া হল, আব্দুস সামাদ আজাদ হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, হযরত শাহপরাণ (র.) হল রয়েছে। এছাড়া ছাত্রীদের জন্য রয়েছে- সুহাসিনী দাস হল ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হল।

বর্তমানে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক দলের সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ রয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় বেশ কিছু সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন রয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- প্রাধিকার, কৃষ্ণচুড়া সাংস্কৃতিক সংঘ, ডিবেটিং সোসাইটি, ইয়ুথ ক্লাব, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (সিকৃবিসাস)।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসকে ঘিরে শুক্রবার (১ নভেম্বর) থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানান স্মৃতি, ছবি ও ভিডিও শেয়ার করতে দেখা গেছে সিকৃবির সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের। তবে দিনটিকে ঘিরে কোনো আয়োজন না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন শিক্ষার্থীরা।

ভেটেরিনারি অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী দিনটি সবসময় স্পেশাল হওয়া উচিত। দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাবর্ষিকী ঘিরে আলোকসজ্জাসহ নানা আয়োজন করে। তবে সিকৃবিতে এখন পর্যন্ত বিশেষ কোনো আয়োজন করতে দেখিনি। গত বছর এই দিনে শোভাযাত্রা আর কেক কেটেই শেষ করা হয়েছিল। দিবস উদযাপন নিয়ে কর্তৃপক্ষের ভাবা উচিত।’

তবে দেরিতে হলেও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন করা হবে জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলিমুল ইসলাম বলেন, ‘আজ পাশ্ববর্তী সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছে। পাশাপাশি গত কয়েকদিন ছাত্রদের আন্দোলনের কারণে দিবসটি ঘিরে প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হয়ে উঠেনি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা উন্নয়ন কাজে আমাকে ঢাকায় যেতে হচ্ছে। তাই এবার তারিখটা একটু পিছিয়ে দিচ্ছি। যাতে একটু  জাঁকজমকপূর্ণভাবে আয়োজন করতে পারি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ছাত্র শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে সুন্দরভাবে আয়োজিত হবে। আগামীকাল আমি সব শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে এ আয়োজনের তারিখটি ঠিক করব। আশা করি, ২০ তারিখের মধ্যেই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন করতে পারবো।