এক ঝাঁক স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পথচলা শুরু করেছেন ভর্তি যুদ্ধ পেরিয়ে আসা প্রতিটি নবীন শিক্ষার্থী। তাই স্বাভাবিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ঘিরে নবীনদের প্রত্যাশা থাকে অনেক, থাকে বহু স্বপ্ন আর লক্ষ্য পানে ছুটে চলার অদম্য ইচ্ছা। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমনই এক ঝাঁক নবীন তাদের প্রিয় ক্যাম্পাস নিয়ে প্রত্যাশা ও স্বপ্ন তুলে ধরেছেন।
যবিপ্রবি হোক দেশ সেরা বিশ্ববিদ্যালয়
শিক্ষা, গবেষণা ও শিক্ষা সহায়ক কার্যক্রমে দেশের সেরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে উঠুক আমাদের এই ক্যাম্পাস। হাজারো তরুণ স্বপ্ন দেখে যবিপ্রবির মত একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্য হওয়ার। আমি গর্বিত, আমি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সদস্য হয়েছি। এখন থেকে এটা আমার দ্বিতীয় পরিবার। আশা করি, আমি এ নতুন পরিবার থেকে একজন সুশিক্ষিত মানুষ হয়ে উঠবো এবং দেশ গঠনের জন্য একজন যোগ্য সদস্য হব। (লেখক: মো. মাজহারুল ইসলাম মৃদুল, শিক্ষার্থী, জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগ)
ছাত্র রাজনীতি মুক্ত ও গবেষণা নির্ভর ক্যাম্পাস চাই
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চাওয়া প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীর কাছে অনেক বড় স্বপ্ন। আলহামদুলিল্লাহ আমি সে স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি। আমি চাই, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার জন্য শতভাগ সুযোগ-সুবিধা , সুন্দর পরিবেশ ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম থাকবে। যাতে আমরা অনেক সহজে গবেষণা করতে পারি। গবেষণার মাধ্যমে আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে চাই।
এছাড়াও আমি চাই, যবিপ্রবি হোক সম্পূর্ণ ছাত্র রাজনীতিমুক্ত একটি প্রতিষ্ঠান। ছাত্র রাজনীতির জন্য অনেকে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করতে পারে না। আমাদের মধ্যে র্যাগিংসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি কাজ করে। আমি ভয়হীন ও র্যাগিং মুক্ত একটি ক্যাম্পাস চাই, যেখানে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের শিক্ষক, সিনিয়র, জুনিয়র একসঙ্গে একটি পরিবারের মতো থাকতে পারি। এর পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি ও অধিকার পূরণের জন্য ছাত্র সংসদ গঠন করা যেতে পারে। (লেখক: মো. রাশেদুল ইসলাম, শিক্ষার্থী, ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগ)
আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা ও পর্যাপ্ত ল্যাব সুবিধা চাই
প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বপ্নের জায়গা। বর্তমানে যবিপ্রবি আমাদের দ্বিতীয় পরিবার তাই এ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার থেকে আমরা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আশা করছি। আমারা প্রত্যাশা থাকবে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান অর্জনের জন্য আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা ও ত্রুটিমুক্ত ল্যাব সুবিধা নিশ্চিত করা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আরও প্রত্যাশা করব র্যাগিং ও সেশনজট মুক্ত একটি ক্যাম্পাসের। আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের সব চাহিদা পূরণে সচেষ্ট থাকবে এবং যবিপ্রবি যেন দেশে রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হতে পারে সে বিষয়ে অধিক গুরুত্ব দিবে। (লেখক: জান্নাতুল ফেরদৌস দীপ্তি, শিক্ষার্থী, রসায়ন বিভাগ)
সেশনজট মুক্ত ক্যাম্পাস চাই
যবিপ্রবি একটি সম্পূর্ণ র্যাগিং মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়। একজন নবীন শিক্ষার্থী হিসেবে রাগিং মুক্ত ক্যাম্পাসে ভর্তি হতে পারা অনেক বড় প্রাপ্তি। পাশাপাশি নবীন-প্রবীণ সব শিক্ষার্থীই চান, যেন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিজেদের শিক্ষা জীবন শেষ হয়। কিন্তু গত কয়েক মাসে দেশের সংকটময় পরিস্থিতির জন্য সেশনজটে পড়াটা অস্বাভাবিক নয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি, দেশের ক্রান্তিকালে আমাদের যে অ্যাকাডেমিক ক্ষতি হয়েছে, সেটা পূরণে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা যেন গ্রহণ করে।
শিক্ষা ব্যবস্থা, শিক্ষা সহায়ক কার্যক্রম সবকিছুতেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় অনন্য। ল্যাব সুবিধা, গবেষণা ব্যবস্থা, শিক্ষক, শ্রেণীকক্ষ, আবাসিক ব্যবস্থা সবকিছুই পর্যাপ্ত। এছাড়াও একজন শিক্ষার্থী হিসেবে নিজের উদ্ভাবনী চিন্তা-চেতনাকে বিকশিত করার জন্য একটা শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের যতটুকু দরকার, তার সবকিছুতেই পরিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ যবিপ্রবি। (লেখক: মারজিয়া সুলতানা, শিক্ষার্থী, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ)
হলে ভালো খাবার এবং খেলাধুলার সু-ব্যবস্থা চাই
নতুন বছরে নতুন রঙে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নবীন শিক্ষার্থীদের পদচারণায় প্রাণ ফিরে পায়। প্রত্যাশা থাকবে ক্যাম্পাসের মৌলিক যে সমস্যাগুলো আছে, সেগুলো সমাধানে যেন নজর দেওয়া হয়। যেমন- হলের খাবারের মান নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। আমাদের ক্যাম্পাসে খেলার মাঠের সংখ্যা বাড়াতে হবে। কেননা আমাদের একটি খেলার মাঠ হওয়ায় ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা পর্যাপ্ত পরিমাণে খেলার সুযোগ পায় না। এছাড়া একটি কেন্দ্রীয় সুইমিং পুলও প্রয়োজন।
আরেকটা বড় প্রত্যাশা হলো, ক্যাম্পাসে যেন আর লেজুড়বৃত্তির ছাত্র রাজনীতি ফিরে না আসে। ক্যাম্পাস হোক সুস্থ, সুন্দর, র্যাগিং মুক্ত বিশ্বমানের। (লেখক: আরেফিন রিফাত, শিক্ষার্থী, ফিজিক্যাল অ্যাডুকেশন অ্যান্ড স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগ)