ক্যাম্পাস

চতুর্থ সমাবর্তনের সম্ভাব্য সময় জানালেন গবি উপাচার্য

দীর্ঘ ১০ বছর পর চতুর্থ সমাবর্তন আয়োজনের লক্ষ্যে প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম শুরু করে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয় (গবি)। সমাবর্তনের তারিখ ঘোষণা ছাড়াই নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হলেও নানা কারণে স্থবির হয়ে যায় বহুল প্রতিক্ষীত এ সমাবর্তনের প্রস্তুতি। শনিবার (২ নভেম্বর) অবশেষে সমাবর্তনের সম্ভাব্য সময় জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন।

এদিকে, সমাবর্তনে অংশগ্রহণের জন্য নিবন্ধনের নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি বা কোনো নোটিশ না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা। এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চলছে এ নিয়ে সমালোচনার ঝড়। 

সমাবর্তনের প্রস্তুতিকার্য স্থবির হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী নঈম বলেন, ‘গত ১০ বছর ধরে গবিতে সমাবর্তন হচ্ছে না। অবশেষে চতুর্থ সমাবর্তন আয়োজনের ঘোষণা আসে। দুই ধাপে নিবন্ধনের মেয়াদ বাড়ানো হলেও কবে নাগাদ হবে এ সমাবর্তন, সেই সংলাপের অন্ত মিলছে না। ব্যক্তিগতভাবে আমি এই সমাবর্তন নিয়ে খুব উচ্ছ্বসিত ছিলাম। তবে দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে সমাবর্তন নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ছে। আশা করি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুততম সময়ের মধ্যে আমাদের জন্য একটি সফল সমাবর্তনের আয়োজন করবে।’

জানা গেছে, পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাবর্তনে অংশগ্রহণযোগ্য যে শিক্ষার্থী তালিকা প্রেরণ করা হয়েছিল, তা বাতিল হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নতুন শিক্ষার্থী তালিকা প্রেরণের নির্দেশনা দিয়েছে ইউজিসি। পাশাপাশি সমাবর্তন আয়োজনের কার্যক্রম পুনরায় শুরু করতে প্রশাসনকে সমাবর্তনের নতুন সম্ভাব্য তারিখ, নতুন শিক্ষার্থী তালিকা এবং স্থান উল্লেখ করে ফিরতি চিঠি পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই এ কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। 

এ সমাবর্তনে ২০১৪ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত স্নাতক/স্নাতকোত্তর, ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত পেশাগত এমবিবিএস এবং ২০১৭ সালের আগষ্ট থেকে ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত পেশাগত বিডিএস ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এছাড়াও ২০২৪ সালের জানুয়ারি সেশনের পর যে শিক্ষার্থীরা স্নাতক/স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছে, তাদের নামও নতুন তালিকায় যুক্ত করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন জানান, ছাত্র জনতার আন্দোলন এবং সরকার পতনের মধ্য দিয়ে দেশজুড়ে শুরু হয় অস্থিরতা। দেশের এমন অস্থিতিশীল অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক স্থগিত রাখা হয় দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের দায়িত্ব নেওয়ার পর ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্থগিতকৃত সমাবর্তন আয়োজনের কার্যক্রম পুনরায় শুরু করেছে। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি (সম্ভাব্য) মাসেই আয়োজিত হবে গবির চতুর্থ সমাবর্তন।

নিবন্ধন প্রক্রিয়ার বিষয়ে তিনি জানান, ইতোপূর্বেই নিবন্ধনের সময়সীমা শেষ হয়েছে। নতুন করে সময়সীমা বাড়ানো হবে না। ইউজিসি কর্তৃক চিঠি পেয়েই সমাবর্তনের কার্যক্রম পুনরায় শুরু করছে প্রশাসন। তবে, সমাবর্তনের চূড়ান্ত তারিখ নির্ধারণ হলে নিবন্ধনের জন্য আবার সুযোগ দেওয়া হবে।

উপাচার্য জানান, সমাবর্তনের প্রাথমিক সব প্রস্তুতিই সম্পন্ন ছিল। দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে সমাবর্তন আয়োজন করতে বিলম্ব হয়েছে। ইউজিসি থেকে পুনরায় সমাবর্তন আয়োজনের বিষয়ে জানানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও পুনরায় কার্যক্রম শুরু করেছে। আশা করি, শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সফল সমাবর্তন আয়োজন করা সম্ভব হবে।

এর আগে, গত ২ মে থেকে শুরু হয় গবির চতুর্থ সমাবর্তনের নিবন্ধন প্রক্রিয়া। এরপর অন্তত দুই দফায় নিবন্ধনের সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়। দ্বিতীয় দফায় নিবন্ধনের সময়সীমা গত ১ আগস্ট শেষ হয়।