মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন ছাড়াই আল বেরুনী হলের বর্ধিতাংশের লেকের পাড়ে পাঁচ শতাধিক গাছ কেটে ছয়তলা বিশিষ্ট চারুকলা অনুষদের ভবন নির্মাণের প্রতিবাদে দীর্ঘদিন থেকে আন্দোলন করছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। অবশেষে বিতর্কিত সেই স্থানে ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সড়ে এসেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসানের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেছেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আপত্তি থাকায় চারুকলার নির্মাণাধীন ভবনের বিষয়ে আজ জরুরি সভা হয়েছে। সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছে, চারুকলা ভবনের জন্য পূর্বনির্ধারিত স্থানটি বাদ দিয়ে নতুন স্থান নির্ধারণ করা হবে। তবে, এ প্রকল্পে ইতোপূর্বে ব্যয়িত অর্থের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার শর্তে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা এ সিদ্ধান্তে সম্মত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, নতুন স্থান নির্ধারণের বিষয়ে ইতোমধ্যে একটি কমিটি করা হয়েছে। আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে কমিটি রিপোর্ট পেশ করবে।
সভায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী প্রতিনিধি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী আলিফ মাহমুদ বলেছেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে গাছ কেটে অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণের প্রতিবাদ ও স্থান পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে এসেছি। এর আগে ছাত্রলীগের উপস্থিতিতে তারা ভবন নির্মাণের পাঁয়তারা করে। তারপরও আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি। আমাদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন চারুকলা ভবন স্থানান্তরে সম্মত হয়েছে।
চারুকলা ভবন নির্মাণ প্রকল্পে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ অর্থায়নে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের কার্যাদেশ হয়েছিল। তবে, বাংলাদেশের ওপর ভারতীয় আধিপত্যবাদী আচরণের অভিযোগ তুলে ভারতীয় অর্থায়নের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে প্রতিবাদও জানান শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে আধিপত্যবিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক শাহারিয়ার আঞ্জুম বলেন, ভারত সব সময়ই বাংলদেশের জন্য একটি আধিপত্যবাদী শক্তি। চারুকলা প্রকল্পও আধিপত্যেরই একটা অংশ। আমরা চাই, চারুকলা ভবন হোক, তবে সেটা ভারতীয় অর্থায়নে নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে হোক।