ক্যাম্পাস

এক যুগ পর প্রকাশ্যে নবীনদের বরণ করলো চবি শাখা শিবির

দীর্ঘ ১২ বছর পর প্রকাশ্যে নবাগত শিক্ষার্থীদের নিয়ে নবীন বরণ ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রশিবির। এতে চবির ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের অন্তত দেড় হাজার নবীন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন বলে জানা গেছে।

শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং গেইট সংলগ্ন এ জে সম্মেলন হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

চবি শাখা শিবিরের সভাপতি নাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং শিক্ষা ও এইচআরএম সম্পাদক হাফেজ মুজাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, চবির ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মো. বরকত আলী।

এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে শিবিরের কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ডা. ওসামা রায়হান এবং বিশেষ আলোচক হিসেবে ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. হাশমত আলী উপস্থিত ছিলেন। এর আগে, চবি শাখার সেক্রেটারি মোহাম্মদ ইব্রাহিম উদ্বোধনী বক্তব্য দেন।

শিবিরের কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ড. ওসামা রায়হান বলেন, “সময় নিয়ে সঠিক মানুষকে বন্ধু নির্বাচন করতে হবে। এমন ব্যক্তিকে বন্ধু বানাতে হবে, যে জ্ঞানী, বিচক্ষণ, সুন্দর ও পূণ্যবান হবেন। বর্তমান প্রজন্মের সবচেয়ে বড় সমস্যার একটি হলো হতাশা; যা আত্মহত্যা পর্যন্ত নিয়ে যায়। সঠিক পথ দেখাতে আগামী দিনে ইসলামি ছাত্রশিবির যে কোনো প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবে।”

শিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বলেন, “গত ১৫ বছরে ইসলামি ছাত্রশিবিরকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয়নি। দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীরাও ছাত্রশিবির সম্পর্কে জানতে পারেননি। দেশব্যাপী এক ধরনের ভয়ের সংস্কৃতি ছিল। কোনো দল যদি ইসলামী মূল্যবোধ ধারণ করে এবং দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কাজ করে, আমরা তাদের সঙ্গে ঐক্যমত পোষণ করবো। আমাদেরকে আদর্শিকভাবে কেউ মোকাবেলা করতে পারে না। কেননা, আমাদের আদর্শ নবী ও সাহাবীদের আদর্শ।”

তিনি বলেন, “আমরা কোনো শিক্ষার্থীকে জোরজবরদস্তি করে বলি না যে, ছাত্রশিবির করতে হবে। সকলে দলে দলে এসে শিবিরে যোগ দিবে, আমরা এমনটাও চাই না। আমরা চাই, একজন মানুষ হিসেবে আপনারা নীতি-নৈতিকতা, দেশপ্রেম ও ইসলামি মূল্যবোধ বজায় রাখেন। শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভালো কাজ করতে আমরা অন্যান্য সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানাই।”

চবির ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. বরকত আলী বলেন, “মানুষ হলো একটি সামাজিক জীব। যারা অন্যের অধিকার ক্ষুণ্ন করে না, অন্য মানুষকে হত্যা করে না। কিন্তু আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছায় আমরা মানুষ হলেও আমাদের মধ্যে পশুত্বের ভাব রয়েছে। এ পশুত্ব দূর করতে আল্লাহ মহাগ্রন্থ আল কোরআন নাযিল করেছেন। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের পাঁচটি বিষয় খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। তা হলো- চরিত্র, সৃজনশীলতা, যোগাযোগ, সক্ষমতা ও সাহস।”

তিনি বলেন, “আজ আমরা সমাজ ও দেশে নেতৃত্ব দিতে পারি না। কারণ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভালো নেই। নেতৃত্ব ও জ্ঞান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনা কম হয়। আজ চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দক্ষ, যোগ্য ও সক্ষম নাগরিক হিসেবে তৈরি করে তুলছে। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ঢেলে সাজাতে হবে। শিক্ষার্থী হিসেবে নিজেদের অন্তর্চক্ষুকে সমৃদ্ধি করতে হবে।”

অনুষ্ঠানে ইসলামি সঙ্গীত পরিবেশন করেন চবির সাংস্কৃতিক সংগঠন দুর্নিবার শিল্পীগোষ্ঠী। নবীন শিক্ষার্থীদের উপহার হিসেবে ছিল- টিশার্ট, বই, নোটখাতা, ২০২৫ সালের ডেস্ক ক্যালেন্ডার প্রদান করে সংগঠনটি।