ক্যাম্পাস

জবি সাংবাদিকের ওপর ছাত্রদলের হামলা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের মারামারির ছবি ও ভিডিও ধারণ করায় এক সাংবাদিককে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। রোববার (১৭ নভেম্বর) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার পূর্ব পাশে এই ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী মো. জুনায়েত শেখ দৈনিক কালের কণ্ঠের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ধূপখোলা মাঠে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ইংরেজি ও গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীদের মারামারির ঘটনা ঘটে। পরে তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে আবারও মারামারির ঘটনা ঘটে। এ মারামারির ভিডিও করতে গেলে ওই সাংবাদিককে প্রথমে বাঁধা দেন শাখা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক পরাগ হোসেন। এর এক পর্যায়ে শাখা ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা-কর্মী ওই সাংবাদিকের ওপর অতর্কিত হামলা করেন এবং ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।

সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কালের কণ্ঠের জবি প্রতিনিধি মো. জুনায়েত শেখ মারামারির ঘটনার ভিডিও মোবাইলে ধারণ করতে গেলে প্রথমে বাঁধা দেন শাখা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক পরাগ হোসেন। এ সময় উপস্থিত থাকা অজ্ঞাত আরও কয়েকজন সাংবাদিকের উপর হামলা করেন।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক মো. জুনায়েত শেখ বলেন, “আমি ভাস্কর্য চত্বরে দাড়িয়ে ছিলাম। দেখতে পাই ক্যাফেটেরিয়ার পূর্ব দিকে মারামারি হচ্ছে। আমি ফোন দিয়ে ভিডিও করতে শুরু করি। এ সময় চার-পাঁচজন ভিডিও করার কারণ জিজ্ঞেস করলে আমি সাংবাদিক পরিচয় দেই।” 

তিনি বলেন, “এরপর তারা ‘তুই কে? তুই কিসের সাংবাদিক! ভিডিও কেন করবি?’ বলে ফোন ছিনিয়ে নিতে যায়। বাঁধা দিলে তাদের কয়েকজন আমার বুকে আঘাত করে। পরে আমি নিজেকে আবারও সাংবাদিক পরিচয় দিলে তারা সরে যায়। এ সময় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সবাইকে সরে যেতে বলেন।”

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শাখা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক পরাগ হোসেন বলেন, “আমি সেখানে হামলা ঠেকিয়েছি। আমি হাত দিয়ে সবাইকে সরিয়ে দিচ্ছিলাম। সেখানে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীরাও ছিল।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা বলেন, “ভিডিও ফুটেজ দেখে বোঝার উপায় নেই, কারা গায়ে তুলেছে।  আমরা শনাক্ত করতে পারছি না। আমাদের সঙ্গে সাংবাদিকদের কোনো খারাপ সম্পর্ক নেই; করতেও চাই না।”

জবি ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসলাম বলেন, “ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। শুধু সাংবাদিক নয়, কোনো শিক্ষার্থীর ওপর হামলা হলেও আমরা তার তীব্র নিন্দা জানায়। কে হামলা করেছে, তার পরিচয় শনাক্ত করা গেলে আমরা সাংগঠনিকভাবে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেব।”

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসিরের মোবাইলে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, “একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। পরবর্তীতে ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”