ক্যাম্পাস

ভারতীয় আধিপত্য উৎখাতের আহ্বান মাহমুদুর রহমানের

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ‘শাহবাগ ও ফ্যাসিবাদ এবং নয়া বাংলাদেশ গতিপথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে আমার দেশ প্রত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান জুলাই বিপ্লব সফলের মাধ্যমে ভারতীয় আধিপত্য উৎখাত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “ভারতীয় হ্যাজিমনি (আধিপত্য) এখনো সম্পূর্ণ শেষ হয়নি। তবে আমাদের জুলাই বিপ্লবের জন্য এ হ্যাজিমনি শেষ করার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। জুলাই বিপ্লব সফল হতে হলে ভারতীয় হ্যাজিমনি উৎখাত করতে হবে।”

রোববার (১৭ নভেম্বর) বিকালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জাস্টিস ফর জুলাই এ সভায় আয়োজন করে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এ সভায় তিনি বলেন, “জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে বাঙালি মুসলমানের রেনেসাঁর একটি সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের সবকিছুতে পারদর্শী হতে হবে। তাহলে আমরা বাঙালি মুসলমানদের রেনেসাঁর একটি স্বপ্ন দেখতে পাব। জুলাই বিপ্লব সফল করতে বাঙালি মুসলমানদের আইডেনটিটি ধারণ করতে হবে। বাঙালি মুসলমানদের আলাদা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য আছে।”

তিনি আরও বলেন, “২০১৩ সালের গণজাগরণ মঞ্চের ওপর ভিত্তি করে শেখ হাসিনা পরবর্তী ১৩ বছর দেশের মানুষের ওপর সবকিছু চাপিয়ে দিয়েছিল। এতে সাহায্য করেছিল ভারত। বাংলাদেশকে ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছিল। ভারত বাংলাদেশকে হাতের মুঠোয় রাখতে চেয়েছিল।”

সাংবাদিক ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, “ওই সময় সব মিডিয়া গণজাগরণ মঞ্চের বন্দনায় মুখর ছিল। কোনো মিডিয়ার তখন সাহস ছিল না গণজাগরণ মঞ্চের বিরুদ্ধে লেখার। শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের যে নেচার (চরিত্র) ছিল, তা দেখেই বুঝতে পারছিলাম এটা ফ্যাসিবাদের জন্ম দেবে।”

বাঙালি জাতীয়তাবাদের বয়ান মূলত হিন্দুদের জন্য ছিল উল্লেখ করে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক বলেন, “মুসলমানের জন্য বাঙালি জাতীয়তাবাদের এ বয়ান ছিল না। বাঙালি জাতীয়তাবাদে মুসলমানের কোনো জায়গা ছিল না। আওয়ামী লীগ ও ভারত মূলত বাঙালি জাতীয়তাবাদটা বাংলাদেশের মুসলমানের ওপর চাপিয়ে দিয়েছিল। ভারত বাংলাদেশকে যুদ্ধে সাহায্য করেছে জিও পলিটিক্সের (ভূ-রাজনীতি) কারণে। ১৯৭১ সালে ভারতের যে সহায়তা, সেটা বিজনেস ট্রানজেকশন ছিল। প্রজন্মের পর প্রজন্ম কেন আমরা ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব।”

তিনি বলেন, “বর্তমান সরকারের কাছে একটি গণতান্ত্রিক পদ্ধতি চাই। আমাদের বিপ্লবের স্পিরিট নিয়ে লড়াইটা ধরে রাখতে হবে। লড়াইটা হবে ভারতীয় হ্যাজিমনি নিয়ে। নতুন কোনো ফ্যাসিবাদ যাতে জন্ম না নেয়, সেজন্য লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। হিন্দুত্ববাদের বিরুদ্ধে বুদ্ধিদীপ্ত লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।”

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীনের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান মো. মেজবাহ-উল-আজম সওদাগর, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক নাসির উদ্দিন আহমদ, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক।