ইতিহাস, ঐতিহ্য ও গৌরবের দীর্ঘ ৫৮ বছর পেরিয়ে ৫৯তম বছরে পদার্পণ করেছে দেশের অন্যতম সেরা বিদ্যাপীঠ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)। এ উপলক্ষে দিনব্যাপী নানা আয়োজনে উদযাপিত হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মরণ চত্বরে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন। এরপর উপাচার্যের নেতৃত্বে শুরু হওয়া আনন্দ শোভাযাত্রা কাটাপাহাড়, শহিদ মিনার চত্বর, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ অতিক্রম করে প্রশাসনিক ভবনে এসে কেক কাটা হয়।
বেলা ১১টায় চবি সমাজ বিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন, উপাচার্য ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দীন খান (অ্যাকাডেমিক) এবং অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন (প্রশাসন)।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফের সঞ্চালনায় এতে স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন। এছাড়া বক্তব্য দেন, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল আমিন, শামসুন্নাহার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ইসমত আরা বেগম, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ, সুলতানা জেরিন জুমু, মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।
এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, “৫৯ বছরেও আমরা একটি আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়, আধুনিক লাইব্রেরি এবং চবি মেডিক্যাল সেন্টারে মানসম্মত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে পারিনি। শিক্ষকরা এখনো শিক্ষার্থীবান্ধব হতে পারেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাঙ্কিং চাচ্ছি, কিন্তু আমরা গবেষণা সেক্টরে পিছিয়ে আছি। শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের একটি সমস্যা ছিল, সনাতন পদ্ধতিতে ফি পরিশোধ করা। আজ থেকে শিক্ষার্থীরা তাদের যাবতীয় ফি অনলাইনের মাধ্যমে ব্যাংকে প্রদান করতে পারবে।”
তিনি বলেন, “আমরা সেশন জটের সমস্যা দূর করতে কাজ করছি। আশা করছি ,এটা থাকবে না। বঙ্গবন্ধু ও অতীশ দীপঙ্কর হলের বয়স ৭ বছর চলছে। একটা হল চালু করতে কি সাত বছর লাগে? নতুন কলা ভবনেরও একই অবস্থা। ঠিকাদার আমার কাছে ১৫তম বার সময় বৃদ্ধি চাচ্ছে। তাদের আর সুযোগ দেওয়া হবে না। আমরা নতুন কন্ট্রাক্টর নিয়োগ দেব।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজেরও সংস্কার ইতোমধ্যে শুরু করেছি। চাকসু নির্বাচন নিয়ে শিক্ষার্থীরা কথা বলছে। আমরা খুব দ্রুত চাকসু নির্বাচনের ব্যবস্থা করবো। ক্যাম্পাসে অভ্যন্তরীণ যাতায়াতের জন্য ইলেক্ট্রনিক বাইক ও জোবাইক এর ব্যবস্থা এবং লাইব্রেরিতে ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন করবো। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন নাস্তা ও পানীয় পান করতে পারবে। দ্রুতই হলগুলোতে ওয়াশিং মেশিনের ব্যবস্থা করবো। ছাত্ররা আন্দোলন করেছে বিধায় আমি উপাচার্য হতে পেরেছি। শিক্ষার্থীদের কল্যাণেই হবে আমাদের যাবতীয় কাজ।”
আলোচনা শেষে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক ও সাহিত্য অনুষ্ঠান।