জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সাংবাদিক মো. জুনায়েত শেখের উপর ছাত্রদল নেতাদের হামলার ঘটনায় বিচার দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক মো. জুনায়েত শেখ দৈনিক কালের কণ্ঠের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে ভাস্কর্য চত্বরে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক জোট’ এর ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকরা। এ সময় দোষীদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন তারা।
মানববন্ধনে জবি প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও বাংলা ট্রিবিউনের সাংবাদিক সুবর্ণ আস-সাইফ বলেন, “২০১৮ সালে সাংবাদিকদের উপর নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে সাংবাদিকরা এ শান্ত চত্বরে দাঁড়িয়েছিল। আজ পাঁচ বছর পর সেই নিষিদ্ধ সংগঠন না থাকলেও আবার আমদের এখানে দাঁড়াতে হয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।”
তিনি বলেন, “গতকাল কালের কণ্ঠের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক জুনায়েদ শেখের উপর হামলার ২৪ ঘণ্টা পার হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। যারা সমাজের কণ্ঠস্বর ও দর্পণকে বন্ধ করতে চাচ্ছেন, তাদের জন্য হুঁশিয়ারিসহ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।”
জবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জনকণ্ঠের জবি প্রতিনিধি মামুন শেখ বলেন, “সাংবাদিকরা নির্দিষ্ট কারও পক্ষের নয়, তারা দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করেন। কালের কণ্ঠের জবি প্রতিনিধি মো. জোনায়েদ শেখের ওপর হামলা একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হামলাকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিবে এবং ছাত্রদলের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যত্থায় আমরা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবো।”
জবি প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও প্রতিদিনের বাংলাদেশের জবি প্রতিবেদক ইউসুফ ওসমান বলেন, “ছাত্রদলের সন্ত্রাসী ক্যাডাররা বর্বর হামলা করেছে সাংবাদিক মো. জোনায়েদ শেখের উপর। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি আন্দোলনে সাংবাদিকরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সন্ত্রাসী বাহিনী ছাত্রলীগও একই কায়দায় সাংবাদিকদের ওপর হামলা করতো।”
তিনি বলেন, “সাংবাদিক সমাজ কোনো সন্ত্রাসী, লুটেরাদের বিরুদ্ধে মুখ বন্ধ করে রাখবে না। তাদের কলম সবসময় চলমান থাকবে। অতিদ্রুত হামলাকারী সন্ত্রাসীদের বিরূদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানাচ্ছি।”
সাংবাদিক সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য ও ঢাকা পোস্টের প্রতিনিধি মাহতাব লিমন বলেন, “বিগত ১৬ বছর যে ছাত্রদলের নেতারা ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারেনি, দেড় বছর আগেও যারা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের হামলায় এই শান্ত চত্বরে পড়েছিল, তখন সাংবাদিকরাই তাদের হাসপাতালে নিয়ে গেছে। জবি সাংবাদিকরা ছাত্রলীগ আমলে শিক্ষার্থী ও বিরোধী দলগুলোর অধিকার ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য রক্ত পর্যন্ত ঝরিয়েছে।”
তিনি বলেন, “সদ্য ক্যাম্পাসে প্রবেশ করা ছাত্রদল আগের মতো আওয়ামী নীতিতে ক্যাম্পাসে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এ ক্ষেত্রে প্রশাসন যদি হামলাকারীদের বহিষ্কারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে না পারে, তাহলে সারাদেশে সাংবাদিকরা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে।”
এর আগে, সাংবাদিক মারধরের ঘটনায় জড়িত ছাত্রদল নেতার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বিবৃতি দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি ও প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দ।