ক্যাম্পাস

জাবিতে রিকশার ধাক্কায় প্রাণ গেল শিক্ষার্থীর

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) দ্রুতগামী রিকশার ধাক্কায় গুরুতর আহত হওয়া এক শিক্ষার্থী হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা গেছেন।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের সামনে এ দুর্ঘটনার শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আফসানা করিম।

আফসানা করিম জাবির বেগম খালেদা জিয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি শেরপুর জেলায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক (ডেইরি গেট) থেকে নতুন কলাভবনের দিকে একটি রিকশা দ্রুত গতিতে এগিয়ে আসছিল। এ সময় আরেকটি রিকশা ডেইরি গেটের দিকে দ্রুত গতিতে যাচ্ছিল। বিশ্ববিদ্যলয়ের শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে রিকশা দুটি হঠাৎ মুখোমুখি হয়। গতি সামলাতে না পেরে হেঁটে রাস্তা পার হতে যাওয়া আফসানা করিমকে ধাক্কা মারে একটি রিকশা। তিনি গাছের ওপর আছড়ে পড়েন। গুরুতর আহত আফসানাকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে নেওয়া হয়। 

দুর্ঘটনায় আফসানার মুখের নিচের ম্যান্ডিবল ও দাঁত ভেঙে যায়। মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পান তিনি। অবস্থার অবনতি হলে তাকে সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক সাব্বির বলেছেন, ‘‘আমরা যখন আফসানাকে পেয়েছি, তখন চোখের মনি ফিক্সড ছিল। তার হার্টবিট পাইনি। আমরা সাথে সাথে ইসিজি করি। তার বুকে ভারী আঘাতের কালচে চিহ্ন ছিল।’’

হাসপাতালের ডিউটি ম্যানেজার সবুজ বলেন, ‘‘সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আফসানাকে এনাম মেডিক্যালে নিয়ে আসা হয়। আমরা তাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। তার দাঁত পুরো মাড়িসহ বের হয়ে এসেছে। সম্ভবত, এ আঘাতে তার মৃত্যু হয়েছে।’’ 

এ দুর্ঘটনার জন্য ক্যাম্পাসে বেপরোয়া যান চলাচল ও প্রশাসনের অবহেলাকে দুষছেন শিক্ষার্থীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে যে পরিমাণ অটোরিকশা চলাচলের অনুমতি আছে, প্রায় তার দ্বিগুণ অটোরিকশা চলছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। 

এ বিষয়ে এস্টেট শাখার কর্মকর্তা আব্দুর রহমানকে একাধিক ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

৫৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা আফসানার মৃত্যুর ঘটনায় বিচার চেয়েছেন। তারা বলছেন, এ ঘটনায় প্রশাসন কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারে না। 

ক্যাম্পাসে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ, সড়ক উন্নয়ন ও সার্বিক নিরাপত্তার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।