জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) চারুকলা অনুষদের ডিন আলপ্তগীন তুষার বলেছেন, “শিক্ষক মোহাম্মদ জাহিদুল হককে হত্যার হুমকির সঙ্গে জড়িত সব দুর্বৃত্তের বহিষ্কারের দাবিতে আমরা ভাস্কর্য বিভাগের শিক্ষকরা সম্মিলিত হয়েছি।"
তিনি বলেন, “আজ জাহিদকে হুমকি দিয়েছে, কাল আমাকে দেবে। আমি বলে দিতে চাই, বাঘে ছুঁলে ১৮ ঘা, পুলিশে ছুঁলে ৩৬ ঘা। আর শিল্পী সমাজ ছুঁলে পুরো জয় বাংলা হয়ে যাবেন।’
রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বরে আয়োজিত মানববন্ধনে এ সব কথা বলেন তিনি। চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সহকারী প্রক্টর জাহিদুল হককে হত্যার হুমকিদাতা ও তার সঙ্গে জড়িতদের বিচার ও শাস্তির দাবিতে এ মানববন্ধন করা হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ফ্যাসিস্টদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘ফ্যাসিস্টদের ঠিকানা, জগন্নাথে হবে না’, ‘এক জাহিদ মরে গেলে লক্ষ জাহিদ ঘরে ঘরে’ সহ নানা স্লোগান দেন।
মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদী চিত্রাঙ্কন কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় হুমকিদাতাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বহিষ্কার ও সন্ত্রাসবিরোধী বিশ্বজিৎ ভাস্কর্য স্থাপনের দাবি জানান তারা।
মানববন্ধনে প্রিন্ট মেকিং বিভাগের চেয়ারম্যান বজলুর রশীদ বলেন, “আমাদের স্নেহভাজন জাহিদুল হককে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরও। আমরা ব্যথিত বোধ করছি, এজন্য এখানে দাঁড়িয়েছি। এ হুমকিতে আমরা ভয়ে গুটিয়ে যাইনি। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।”
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এভাবে প্রাণনাশের হুমকি দেবে, এটা কি মগের মুল্লুক? আমাদের শুধু অনুষদের পক্ষ থেকেই নয়, সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দাঁড়াতে হবে। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে সমস্ত কিছুতে বিজয়ী হতে পারব।”
ভাস্কর্য বিভাগের চেয়ারম্যান ইমাম হোসেন সুমন বলেন, “আমাদের যে সহকর্মীর ওপরে হত্যার হুমকি এসেছে, তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন জাতীয় অংশীজন। বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে তার চিন্তা সবসময় ছিল। আন্দোলনে জবি শিক্ষার্থীদের পক্ষেও তার শক্ত ভূমিকা ছিল। এখনও ওই আন্দোলনের স্পিরিটের বিরোধীরা বহাল তবিয়তে আছে, এ বিষয়ে তার আপত্তি আছে। তিনি এগুলো নিয়ে বলেছেন। এজন্য জাহিদ এখন রাজনৈতিক টার্গেটে পরিণত হয়েছেন। জাহিদের মতো শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষককে আমরা হারাতে চাই না।”
সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সহকারী প্রক্টর ও ভাস্কর্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জাহিদুল হককে গুলি করে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব দপ্তরের কর্মকর্তা সালাউদ্দিন মোল্লার বিরুদ্ধে।
গত বৃহস্পতিবার হত্যার হুমকির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপাচার্য বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষক। পাশাপাশি তিনি কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছেন।