ক্যাম্পাস

সংঘর্ষে জড়িত না থাকার দাবি সোহরাওয়ার্দী কলেজ শিক্ষার্থীদের

ডা. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিতের মৃত্যুর ঘটনায় চলমান সংঘর্ষে নিজেদের জড়িত না থাকার দাবি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে সোহরাওয়ার্দী কলেজে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি করেন।

এ সময় কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। তাদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন কলেজের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী লিখন ইসলাম এবং অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহিম ইসলাম।

শিক্ষার্থী লিখন ইসলাম বলেন, “বিগত কয়েকদিন ধরে ঢাকার যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সহিংস ঘটনা ঘটেছে, সেখানে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা জড়িত নই। তৃতীয় কোনো পক্ষের উস্কানিতে এ ধ্বংষযজ্ঞের ঘটনাগুলো ঘটেছে। যারা এ সহিংসতায় ইন্ধন দিয়েছে, তাদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি করছি।”

শিক্ষার্থী ফাহিম ইসলাম বলেন, “গত ২৪ নভেম্বর আমাদের কলেজে পরীক্ষা চলাকালে অন্যান্য কলেজের কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী হামলা করেন। এতে নারী শিক্ষার্থীসহ অনেকে আহত হন এবং কলেজের মধ্যে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট হয়। আমরা আমাদের কলেজে হামলার প্রতিবাদে গতকাল সোমবার (২৫ তারিখ) ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করি।”

তিনি বলেন, “এ বিক্ষোভ মিছিল চলাকালে আমাদের মাঝে তৃতীয় কোনো পক্ষ ঢুকে শিক্ষার্থীদের উস্কানী দিয়ে ডা. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের দিকে নিয়ে যায় এবং সেখানে গিয়ে হামলা করে। এ হামলার সঙ্গে সোহরাওয়ার্দী কলেজের কোনো সাধারণ শিক্ষার্থী জড়িত নেই।”

তৃতীয় পক্ষ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষার্থীরা বলেন, “এ তৃতীয় পক্ষ হলো ইউনাইটেড কলেজ অফ বাংলাদেশ (ইউসিবি)। আমরা জানতে পেরেছি, দেশের অন্তত ৯০টি কলেজে তাদের কমিটি রয়েছে। দেশে একটা অরাজকতা সৃষ্টি করতে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চালু করা তাদের গ্রুপগুলোতে প্রচার চালাচ্ছে। তারা শিক্ষার্থীদের উস্কানী দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এ হামলা চালিয়েছে।”

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিৎ হালদার গত ১৬ নভেম্বর সকালে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন এবং ১৮ নভেম্বর রাতে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

এ ঘটনায় ২০ ও ২১ নভেম্বর ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, এ দুদিন ন্যাশনাল মেডিকেলের পক্ষ নিয়ে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালান। এ হামলাকে কেন্দ্র করে ফেসবুকে ‘ইউনাইটেড কলেজ অব বাংলাদেশ’ নামে একটি গ্রুপে মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজসহ অন্য কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানাতে থাকেন।

অভিজিতের মৃত্যুর ঘটনায় বিচারের দাবিতে ও আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে রোববার (২৪ নভেম্বর) ঢাকার ৩৫টি কলেজের শিক্ষার্থীরা একজোট হয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ঘেরাও করে। এ সময় তাদের সঙ্গে কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সোহরাওয়ার্দী কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এতে সাংবাদিকসহ ২০ জনের বেশি আহত হন। এদিন সোহরাওয়ার্দী কলেজে আন্দোলনকারীরা ব্যাপক ভাঙচুর চালান।

ভাঙচুরের প্রতিবাদে সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাজধানীর ডেমরায় ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হামলা চালায় কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা।

গত রোববার (২৪ নভেম্বর) একদল শিক্ষার্থী সোহরাওয়ার্দী কলেজের ব্যাপক ভাঙচুর চালানোর পর প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ওই ঘটনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।