আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. রেজাউল ইসলাম মাজেদ কর্মস্থলে আসছেন না। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মজিবুর রহমান মজুমদার।
রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ আগস্ট থেকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত প্রায় ১৫০ দিন নিজ কর্মস্থলে বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত রয়েছেন রেজিস্ট্রার দপ্তরের সেকশন অফিসার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল ইসলাম মাজেদ। গত ২৩ অক্টোবর অনুপস্থিত থাকার জবাব চেয়ে ও কর্মক্ষেত্রে যোগদান করতে নোটিশ দেওয়া হয়।
১০ কার্যদিবসের মধ্যে নোটিশের জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও তিনি জবাব দেননি। পরে গত ৩ নভেম্বর কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এতেও কোনো জবাব না পেয়ে গত ২৭ নভেম্বর তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে আছেন রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সৈয়দুর রহমান। কমিটিতে আরও আছেন, সদস্য সচিব অর্থ ও হিসাব দপ্তরের উপ-পরিচালক এস. এম. মাহমুদুল হক ও সদস্য ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আহসান উল্যাহ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৮ মে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হন মো. রেজাউল ইসলাম মাজেদ। কমিটিতে পদ পাওয়ার আগে ও পরে তার বিরুদ্ধে অসংখ্য শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সংগঠনের কাজে হস্তক্ষেপ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষকদের কটূক্তি, টেন্ডারবাজি, উপাচার্যের গাড়ি রোধসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
২০১৬ সালে কাজী নজরুল ইসলাম হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ সাইফুল্লাহর হত্যার মামলায় এজাহারেও তার নাম রয়েছে। গত ৫ আগস্টের পর সর্বশেষ গত ১৩ আগস্ট শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দেখা যায় তাকে। তবে বিমানবন্দর পুলিশের তৎপরতায় তিনি দেশ ছেড়ে পালাতে পারেননি বলে জানা গেছে। তবে তিনি এখন কোথায় আছেন, সে বিষয়ে কোনো তথ্য জানা যায়নি।
এ ব্যাপারে মো. রেজাউল ইসলাম মাজেদের নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সৈয়দুর রহমান বলেন, “গতকাল (বুধবার) তদন্ত কমিটি সম্পর্কে জানতে পেয়েছি। ইতোমধ্যে সদস্য সচিবকে দায়িত্ব দিয়েছি অভিযুক্তের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য। সম্ভাব্য আগামী রবিবার কমিটির সবাই মিলে সভা করা হবে।”
রেজিস্ট্রার মো. মজিবুর রহমান মজুমদার বলেন, “এর আগে তাকে কর্মস্থলে যোগদানের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি কর্মস্থলে যোগদান না করায় কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এরপরও কোনো জবাব না আসায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”